এইডস রোগের লক্ষন , কেন হয় ? কত মাসে এইডস রোগের লক্ষন প্রকাশ পায় জেনে নিন

 এইডস রোগের লক্ষণ , কেন হয় বা কত মাসে এইডস রোগের লক্ষণ প্রকাশ পায় ? সাধারণত আমরা এই ব্যাপারে অনেকেই বিষয়গুলো জানিনা। তবে আপনাদের জেনে রাখা উচিত , এইডস রোগ হল মারাত্মক এক ব্যাধি। কত মাসে এইডস রোগের লক্ষণ প্রকাশ পায় সাধারণত এই বিষয়গুলো আমাদের জেনে রাখা অত্যন্ত জরুরী । আজকের এই আর্টিকেলে এইডস রোগের লক্ষণ কেন হয় বা কত মাসে এইডস রোগের লক্ষণ প্রকাশ পায় এই বিষয়গুলোর সম্পর্কে বিস্তারিত আলোচনা করা হবে ।

আপনি যদি এইডস রোগের লক্ষণ , কেন হয় বা এইডস রোগের লক্ষণ কখন প্রকাশ পায় এ বিষয়গুলো সম্পর্কে জানতে চান তাহলে সম্পূর্ণ আর্টিকেলটি মনোযোগ সহকারে পড়ুন । তাহলে চলুন আর দেরি না করে এইডস রোগের লক্ষণ, কেন হয় কত মাসে এর লক্ষণ প্রকাশ পায় এই সম্পর্কে বিস্তারিত জেনে নেওয়া যাক।

এইডস কি

এইডস হল একটি ভাইরাস। যেটি এইচ আই ভি ঘটিত রোগ। এই ভাইরাস দেহের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা কেড়ে নেয়। বিশেষ করে শ্বেত রক্ত কণিকাকে আক্রমণ করে । যার ফলে দেহের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা ব্যাপক হারে দুর্বল হয়ে পড়ে এবং খুব সহজেই ব্যাকটেরিয়া ও ফাংগাস ইনফেকশন সহ টিবি রোগ ও ক্যান্সারে আক্রান্ত হওয়ার ঝুঁকি বেড়ে যায় বহুগুন। আমরা এইডস রোগ সম্পর্কে জানলাম , এখন আমরা এইডস রোগের লক্ষণ সম্পর্কে জানব ।

এইডস রোগের লক্ষন 

বেশিরভাগ ক্ষেত্রে লক্ষণগুলো অনেক পরে প্রকাশ পায়।বেশিরভাগ সময় এইডস রোগটি প্রকাশ পেতে আট থেকে ১০ বছর সময় লাগে। কেউ যদি নিজে চিকিৎসকের কাছে যায় এবং ডাক্তারকে সব খুলে বলে যে তার অনিরাপদ যৌন সম্পর্ক রয়েছে । সে ক্ষেত্রে তাড়াতাড়ি রোগ নির্ণয় করা সম্ভব। তবে বেশিরভাগ ক্ষেত্রে লক্ষণগুলো প্রকাশ না পাওয়ার কারণে চিকিৎসকের কাছে রোগীরা অনেক দেরি করে যায়। ফলে সেই মুহুর্তে এইডস নামক ভয়াভহ রোগটি শরিরে বাসা বেধে ফেলে।
আরেকটি বিষয় হলো, মায়ের থেকে এইচ আই ভি যদি বাচ্চাদের ছড়ায়, তাহলে আমরা বাচ্চাদের স্ক্রিনিং করি। যদি বাচ্চারা নেগেটিভ হয়, তাহলে তো তাদের কোনো ঝুঁকি থাকলো না। সেক্ষেত্রে বিভিন্ন চিকিৎসাব্যবস্থা রয়েছে, এর মাধ্যমে নেগেটিভ হতে পারে। তবে আমরা যেহেতু জানতে পারছি,  এটা আক্রান্ত মায়ের কাছ থেকে হচ্ছে, তাই আমাদের আগে থেকেই সতর্ক থাকতে হবে তাহলে সহজেই রোগ নির্ণয় সম্ভব হবে।
লক্ষন সমূহঃ
  • মুখের ভেতরে ঘা হতে পারে
  • জ্বর শীত শীত ভাব হতে পারে
  • প্রচন্ড গলা ব্যথা হতে পারে
  • গলার আশেপাশে লিম্ফনোড বা ফুলে যেতে পারে
  • তোকে র‍্যাশ দেখা দিতে পারে
  • মাংসপেশীতে ব্যথা অনুভব হতে পারে
  • দুর্বলতা ও ক্লান্তি ভাব আসতে পারে
  • মাথা ঘোরা বমি বমি ভাব হতে পারে
  • ঝাপসা দেখা দূরের জিনিস দুইটা দেখা এমন সমস্যাও দেখা দিতে পারে
এইডস রোগের দীর্ঘমেয়াদী লক্ষণের মধ্যে রয়েছে দীর্ঘদিন ধরে জ্বর , ঘন ঘন ডায়রিয়া , পাদুর্ভাব শারীরিক দুর্বলতা ওজন অস্বাভাবিকভাবে কমতে থাকা সহজেই রোগ আক্রান্ত হয়ে পড়া ইত্যাদি এইডস রোগের লক্ষন বহন করে।

এইডস রোগ হওয়ার কারণ 

এই রোগ সম্পর্কে অবগত নেই এমন মানুষ খুঁজে পাওয়া যাবে না। এই রোগ হয়ে থাকে এইচআইভি ভাইরাস সংক্রমণের মাধ্যমে। আমাদের শরীরে যখন এইচআইভি ভাইরাস প্রবেশ করে তখন সাধারণত এই রোগ হওয়ার সম্ভাবনা বেশি থাকে। সারা বিশ্বের মানুষকে এই রোগ সম্পর্কে সতর্কিত করা হয় । তাই একটি নির্দিষ্ট দিনে বিশ্ব এইডস দিবস পালন করা হয়ে থাকে । কত মাসে এইডস রোগের লক্ষণ প্রকাশ পায় সাধারণত এই বিষয়টি জানার আগে আমাদেরকে এইডস রোগ হওয়ার কারণ সম্পর্কে জানতে হবে।
এইডস রোগ হল একটি ভাইরাস সংক্রমিত রোগ। সাধারণত আমরা এই ভাইরাসকে এইচআইভি ভাইরাস বলে থাকি। বিভিন্ন রকম ভাবে এই ভাইরাস আমাদের শরীরের প্রবেশ করে থাকে । তবে এইডস রোগের , অর্থাৎ আমাদের শরীরে এইচআইভি ভাইরাস সংক্রমণের প্রধান কারণ হিসেবে বিবেচনা করা হয় অনিরাপদ যৌন মিলন।
এইচআইভি ভাইরাসের আক্রান্ত কোনো ব্যক্তির সাথে অনিরাপদ যৌন মিলনে লিপ্ত হলে, অর্থাৎ যার সাথে মিলন হয়েছে তার যদি এইচআইভি রোগ থেকে থাকে তবে অপর ব্যক্তির শরীরে এই ভাইরাস প্রবেশ করার সম্ভবনা অনেক বেশি থাকে । এছাড়াও এইচআইভি রোগে আক্রান্ত কোন ব্যক্তির রক্ত যদি অন্য কোন রোগির শরীরে প্রবেশ করানো হয় তাহলে তার ক্ষেত্রেও এই ভাইরাস তার শরীরে প্রবেশ করবে।
এইডস রোগ সংক্রমণ হওয়ার আরেকটি অন্যতম কারণ হলো অতিরিক্ত পরিমাণে মাদক সেবন করা । বিশেষ করে যারা মদ্যপান করে থাকেন অথবা ধূমপানে অভ্যস্ত তাদের ক্ষেত্রে আক্রমণ হওয়ার সম্ভাবনা অনেক বেশি থাকে। এমনকি কোন গর্ভবতী মায়ের যদি এই ভাইরাস থেকে থাকে তবে গর্ভের বাচ্চাও এই ভাইরাসে আক্রমণ হওয়ার সম্ভাবনা বেশি থাকে। এছাড়া একই ইনজেকশন দিয়ে একাধিক ব্যক্তিকে ইঞ্জেক্ট করলে এই ভাইরাস সংক্রমণ হওয়ার সম্ভাবনা থাকে ।

কত মাসে এইডস রোগের লক্ষন প্রকাশ পায় 

আমাদের শরীরে যদি এইচআইভি ভাইরাস সংক্রমিত হয় তাহলে কত মাসে এইডস রোগের লক্ষণ প্রকাশ পায় এই বিষয়গুলো জেনে রাখা আমাদের অত্যন্ত জরুরী । যেহেতু এই আই ভি সংক্রমণের পরেই এইডস রোগ দেখা দেয়, সেক্ষেত্রে এইচআইভি ভাইরাস সংক্রমণে কত মাস পরে এইডস রোগের লক্ষণ প্রকাশ পায় ? চলুন বিষয়গুলো বিস্তারিত জেনে নেই ।
সাধারণত এইচআইভি সংক্রমনের পরে এইডস রোগ রোগের লক্ষণ প্রকাশ পেতে থাকে। তবে অনেকেই বলে এই রোগের প্রকাশ হতে ৮ থেকে ১০ বছর সময় লাগে। প্রাথমিক অবস্থাতে কোনভাবেই বোঝার উপায় থাকে না ফলে রোগ নির্ণয় করা কঠিন হয়ে পড়ে। তবে কেউ যদি প্রাথমিক অবস্থাতেই এই রোগ নির্ণয় করতে পারে , তবে সে অবশ্যই এই রোগের চিকিৎসা নিয়ে সুস্থ হতে পারবে ।
এছাড়া যে কাজগুলো করলে এইচআইভি ভাইরাস আমাদের শরীরে ছড়িয়ে পড়ে সেই কাজগুলো থেকে আমাদেরকে বিরত থাকতে হবে তবেই তাড়াতাড়ি এই রোগ নির্ণয় করা সম্ভব। তবে বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই এই রোগের কোন লক্ষণ প্রাথমিক অবস্থাতে প্রকাশ পায় না তাই ডাক্তারের কাছে গিয়েও কোন লাভ হয় না। তবে অনেক বিশেষজ্ঞরা বলেছেন এইচআইভি সংক্রমণের প্রথম তিন সপ্তাহে কিছু সমস্যা দেখা দিতে পারে । যেমন মাথা ঘোরা, গলায় ব্যথা হওয়া, চোখে ঝাপসা দেখা,শরীর দুর্বল হয়ে যাওয়া ইত্যাদি।
তবে ভয়ের কোন কারণ নেই। সাধারণত এই সমস্যাগুলো পরবর্তীতে ভালো হয়ে যায়। তবে বেশিরভাগ ক্ষেত্রে দেখা যায় এইচআইভি ভাইরাস সংক্রমণের প্রায় দুই থেকে তিন মাস পরে আমাদের শরীরে বিভিন্ন ধরনের লক্ষণ দেখা যায় যে লক্ষণগুলো সম্পর্কে ওপরে আলোচনা করা হয়েছে। সাধারণত এগুলোকে আমরা এইডস রোগের লক্ষণ হিসেবে বিবেচনা করতে পারি। লক্ষণ প্রকাশ পাওয়ার সাথে সাথে আমাদেরকে চিকিৎসকের শরণাপন্ন হতে হবে , এবং পরীক্ষা-নিরীক্ষা করে সঠিক চিকিৎসা নেওয়ার মাধ্যমে সুস্থ হতে হবে ।

কতদিন পর এইডস রোগ পরিক্ষা করতে হয় 

আমরা যদি বুঝতে পারি আমাদের শরীরে এইচআইভি ভাইরাসের সংক্রমণ এসেছে ! তাহলে কতদিন পর এইডস রোগ পরীক্ষা করতে হবে এ বিষয়গুলো সম্পর্কে আমাদের সঠিক ধারণা রাখা অত্যন্ত জরুরী। আমরা এই ব্যাপারটি পরিষ্কারভাবে জেনেছি যে অনিরাপদ যৌন সম্পর্ক হওয়ার ফলে আমাদের শরীরে এই রোগ আক্রমণ করে। এছাড়াও এইচআইভি সংক্রমণ হবার আরো অনেক কারণ রয়েছে,তবে অনিরাপদ যৌন সম্পর্ক এইচআইভি ভাইরাস সংক্রমণের জন্য অন্যতম বলে বিবেচনা করা হয় ।
আপনাদের সুস্বাস্থ্যের কথা বিবেচনা করে আগেই বলা হয়েছে যে এইচআইভি সংক্রমণের দুই থেকে তিন মাসের মধ্যে কিছু লক্ষণ দেখা দেয়। সাধারণত একেক ব্যক্তির ক্ষেত্রে লক্ষণগুলো একেক ধরনের হতে পারে। তবে যেমনি হোক না কেন আপনার যদি অনিরাপদ যৌন সঙ্গমের বদ অভ্যাস থাকে এবং লক্ষণগুলো আপনার মধ্যে প্রকাশ পায় তবে আপনি বুঝতে পারবেন, ঠিক তখনই আপনাকে এইচআইভি অর্থাৎ এইডস রোগ পরীক্ষা করাতে হবে।
আপনি যদি সম্পূর্ণ নিশ্চিত হতে চান তাহলে আপনাকে মিনিমাম ৬-৭ মাস পর পরীক্ষা-নিরীক্ষা করতে হবে। কেননা এই সময়ে পরীক্ষা-নিরীক্ষা করলে বেশিরভাগ সময় ভুল রিপোর্ট আসার সম্ভাবনা অনেক কম থাকে। লক্ষণ গুলো প্রকাশ পাওয়ার পরে বেশিরভাগ মানুষের ক্ষেত্রেই এই সময় পরীক্ষা করলে রিপোর্ট পজিটিভ আসে। তাই এইচআইভি ভাইরাসের সংস্পর্শে গেলে তিন থেকে ছয় মাস পর টেস্ট করাতে হবে।

এইডস এর রোগী কতদিন বাঁচে

এইডস রোগের লক্ষণ কেন হয় কত মাসে এইডস রোগের লক্ষণ প্রকাশ পায় এ ব্যাপারে বিস্তারিত ইতিমধ্যেই আলোচনা করা হয়েছে । আমাদের মধ্যে অনেকে মনে করে থাকে , যে ব্যক্তির এইডস রোগ হবে সাধারণত সে ব্যক্তির বেঁচে থাকার সম্ভাবনা নেই । পৃথিবীর অনেক মানুষ এই রোগে আক্রান্ত তবে আপনি যদি মনে করে থাকেন এই রোগে আক্রান্ত হলেই মানুষ মৃত্যুবরণ করবে এই ধারণাটা সম্পূর্ণ ভুল একটি ধারণা।
কোন ব্যক্তি যদি এইচআইভি ভাইরাসে আক্রান্ত হয় এবং সে সেটা বুঝতে পারে তাহলে বেশ কিছু সতর্কতা অবলম্বন করে এইচআইভি ভাইরাসকে নির্মূল করতে সক্ষম। কারণ এইচআইভি ভাইরাস হলেই যে এইডস রোগ হবে বিষয়টা এমন না। তবে এ রোগ হলে বিভিন্ন ধরনের সমস্যা হয়ে থাকে এটা সত্য, কিন্তু আপনি যদি আপনার মনোবল নিয়ে এই রোগের সাথে লড়াই করেন তবে অবশ্যই এই রোগ থেকে মুক্তি পাওয়া সম্ভব ।

এইডস রোগের লক্ষন এর শেষ কথা

প্রিয় বন্ধুগণ আজকের এই আর্টিকেলে এইডস রোগের লক্ষণ , কেন হয় , কত মাসে এইডস রোগের লক্ষণ প্রকাশ পায়, এইডসের রোগীর টেস্ট কখন করাতে হয়,এমন আরো নানা বিষয়ে আলোচনা করা হয়েছে। যেহেতু এটি একটি মারাত্মক রোগ তাই অবশ্যই আমাদেরকে এই রোগ সম্পর্কে বিস্তারিত জেনে রাখতে হবে । যেন সংক্রমণ হওয়ার সাথে সাথে পদক্ষেপ নিতে পারেন। আশা করি আপনারা উক্ত বিষয়গুলো সম্পর্কে বিস্তারিত জেনে উপকৃত হতে পেরেছন। যদি উপকৃত হয়ে থাকেন তবে আপনাদের বন্ধুদের সাথে শেয়ার করুন । এমন আরো তথ্যমূলক পোস্ট পেতে আমাদের পেজের সাথেই থাকুন। আমরা নিয়মিত নতুন নতুন তথ্য মূলক আর্টিকেল এই পেজে প্রকাশ করে থাকি। এতক্ষণ আমাদের সাথে থাকার জন্য অসংখ্য ধন্যবাদ।

Leave a Comment