মধু সম্পর্কে জানে না এমন মানুষ নেই বললেই চলে । রূপচর্চায় মুধুর গুনাগুন অনেক বেশী । আপনি আগ্রহী বলেই এই পোষ্টটি পড়তে এসছেন । তাই আজ আমরা আপনাদের রুপচর্চায় মধুর গুনাগুন সম্পর্কে জানানোর চেষ্টা করবো ।
রূপচর্চায় মধু ও নিমের ব্যবহার সম্পর্কে আলোচনা করার পূর্বে আমাদের জানতে হবে মধু ও নিমের কার্যকরী এবং গুণাবলী সম্পর্কে। সেক্ষেত্রে রূপচর্চায় মধু ও নিমের ব্যবহার সম্পর্কে জানতে আমাদের আরো সহায়তা করবে এই পোষ্টটি ।
রূপচর্চায় মধুর উপকারিতা
আমরা সকলেই মধুর উপকারিতা সম্পর্কে জানিনা এমন মানুষ নেই বললেই চলে। রূপচর্চার ক্ষেত্রে মধুর উপকারিতা সম্পর্কে জানে না এমন মানুষ অনেকেই আছে। তাই আমরা মধুর উপকারিতা সম্পর্কে জানানোর চেষ্টা করব । মধুর উপকারিতা অপরিসীম সবক্ষেত্রে। তবে রূপচর্চার ক্ষেত্রে প্রথম অবস্থায় মধুর কাজে আসে আমাদের ত্বকের মশ্চারাইজা বৃদ্ধির ক্ষেত্রে।
ত্বকের কোচড়ানো চামড়াগুলো সতেজ করে, ত্বকের গ্লেজ ফিরিয়ে আনতে সাহায্য করে, এবং ত্বকের উজ্জ্বলতা বৃদ্ধি করে তক্কে করে সফ্ট ও নরম।
আরো পড়ুনঃ জলপায়ের উপকারিতা এবং অপকারিতা
এছাড়াও ত্বকের ভারসাম্য বজায় রাখতে মধুর কার্যকরিতা অপরিসীম। তার থেকে ব্রণ কে দূর করার জন্য মধু ব্যবহার করতে পারবেন এছাড়া ত্বক অতিরিক্ত খুশক হলে আপনি নিয়মিত মধু ব্যবহার করতে পারেন এতে খুশক ভাব দূর হবে। আশা করছি উপরোক্ত বিষয়ে আলোচনা করার মাধ্যমে রূপচর্চার ক্ষেত্রে মধুর উপকারিতা গুলো জানতে পেরেছেন। রূপচর্চার ক্ষেত্রে মধুর গুনাগুনের পাশাপাশি নেম এর গুনাগুন ও অনেক বেশি । তাহলে চলুন এবার আমরা নিমের গুনাগুন সম্পর্কে জেনে আসি ।
রূপচর্চায় নিমের উপকারিতা
রূপচর্চায় নিমের উপকারিতা নেই সম্পর্কে জানে না এমন ব্যক্তি নেই বললেই চলে। যদি সে না জানে তাহলে বলতে হবে নিম সম্পর্কে তার কোন ধারণাই নেই। রূপচর্চার ক্ষেত্রে মধুর যেমন গুণাবলী রয়েছে তার থেকেও অনেক বেশি গুণাবলী রয়েছে নিম পাতার মধ্যে। এক কথায় নিমপাতা একটি ঔষধি গাছ। এটা শুধু রূপচর্চার ক্ষেত্রে ব্যবহার হয় না, ঔষধি গুনাগুনের জন্য অনেক বড় ভূমিকা রাখে নিমপাতা। নিমের ডাল দিয়ে মেসওয়াক করলে দাঁতে কখনো পোকা হয় না। মিমের পাতা ঘরের ভিতরে রাখলে বিষাক্ত পোকামাকড় ঘরে বাসা বাঁধতে পারে না। শুধু তাই না অনেক ধরনের রোগের ঔষধ বহন করে এই নিম পাতা ।
যাই হোক আমরা অন্যদিকে না গিয়ে রূপচর্চার দিকে ফিরে আসি।রূপচর্চায় নিমের পাতার গুণাবলী এখন আমরা জানবো। নিমের গুণাবলী সম্পর্কে প্রথম স্থানে থাকবে ব্রণ দূর করার ক্ষেত্রে। ব্রণ কার নেই! এমন ব্যক্তিকে খুঁজে পাওয়া মুশকিল, প্রত্যেকটি মানুষের মুখের কমন একটি সমস্যা সেটা হচ্ছে ব্রণ। ব্রনের ক্ষেত্রে নিম বিদ্যুতের মত কাজ করে। নিম পাতার রস করে যদি আপনি প্রতিদিন রাত্রে ত্বকে ব্যবহার করেন তবে কিছুদিন পর দেখবেন আপনার ব্রণ অনেকটাই কমে গেছে, শুধু তাই নয় নিম পাতার রস আপনার মুখের তৈলাক্ত ভাব চিরতরে দূর করবে, ত্বককে করবে উজ্জ্বল এবং সফট।
অনেক ক্ষেত্রে দেখা যায় গরমের সময় অনেকের এলার্জির সমস্যার কারণে ত্বকে র্যাশ দেখা দেয়। যেখান থেকে চুলকানির আবির্ভাব থাকে মুখের চামড়া কালো হয়ে যেতে পারে এবং ময়লা জীবাণু থেকে ইনফেকশনও হতে পারে। ঠিক সেই সময় আপনি নিমের ব্যবহার করুন। আশা করি ভালো ফলাফল পাবেন। এতক্ষণ আপনারা জানলেন নিমের গুণাবলী সম্পর্কে বিস্তারিত। এবার আমরা জানবো নিম এবং মধু মিশ্রণ করে ত্বকে ব্যবহারের ফলে কি কি উপকার পাওয়া যায়।
রূপচর্চায় নিম ও মধু মিশ্রণ এর ব্যবহার
রূপচর্চায় মধু ও নিমের গুণাবলী সম্পর্কে এতক্ষণ আমরা আলোচনা করলাম। এখন আমরা নিম ও মধু মিশ্রিত ত্বকের গুণাবলী সম্পর্কে জানব। মধু ও নিমের মিশ্রণ ব্যবহারের উল্লেখযোগ্য কিছু নিয়ম হলোঃ
- নিমপাতা প্রথমে বেটে রস করে নিন, এবার নিমের রসের মধ্যে তিন চার চামচ মধু নিয়ে নিন এবং ভালোভাবে মিশ্রণ করে সকাল বিকাল ত্বকে ব্যবহার করুন আপনার ত্বকের ময়লা জীবাণু দূর হয়ে যাবে।
- আপনার ব্রণের সমস্যার কারণে নিম পাতা বেটে পেস্ট করে নিন, পেস্টের সাথে লেবুর রস গোলার জল, এবং মধু মিশিয়ে নিন , ভালো ফলাফলের জন্য প্রতিদিন রাতে ঘুমানোর আগে ত্বকে ব্যবহার করুন।
- আপনার ত্বক মসৃণ করতে নিম ও মধুর মিশ্রণ এক সাথে ব্যবহার করুন।
- শীতকালীন সময়ে অনেকেই নিম পাতা ও মধু মিশ্রণ করে একসাথে ব্যবহার করার মাধ্যমে ত্বককে শুকনো তার হাত থেকে নমনীয় করে তোলে।
ত্বকের যত্ন কিভাবে নিবেন
কিভাবে ত্বকের যত্ন নিবেন চলুন এখন আমরা বিস্তারিত আলোচনা করি। তবে যত্ন নেওয়ার জন্য অবশ্যই আপনাকে প্রাকৃতিক জিনিসের প্রতি নজর দিতে হবে। যেমন আপনি ত্বকের ব্যবহারে কাঁচা হলুদ ব্যবহার করতে পারেন, মসুর ডাল বেটে ত্বকে ব্যবহার করতে পারেন, ন্যাচারাল অরিজিনাল এলোভেরা গাছ থেকে নিয়ে তার পাতা থেকে জেল তৈরি করে মুখে ব্যবহার করতে পারেন, নিয়মিত মধু ও নিমের ব্যবহার করতে পারেন।
- এছাড়াও ঘরোয়া কিছু উপায় যেগুলা আপনি ফলো করতে পারেন তার মধ্যে ঘন ঘন মুখ ধুতে হবে। মুখে কোন ধরনের ময়লা ধুলাবালি জমতে দেওয়া যাবে না। কেননা ধুলাবালি থেকে মুখের কোষ গুলা বন্ধ হয়ে যায় ফলে সেখান থেকে ব্রণ এর উৎপত্তি ঘটে।
- কসমেটিক্স ব্যবহারের ক্ষেত্রে খুব সাবধান। কেননা বাজারে প্রচুর পরিমাণ ডুবলিকেট ক্রিম ফেসওয়াশ স্নো ইত্যাদি পাওয়া যায়। যেগুলো ব্যবহারের ফলে আপনার ত্বকের মারাত্মক ক্ষতি হতে পারে। সুতরাং সস্তা পণ্য ব্যবহার থেকে বিরত থাকুন।
আরো পড়ুনঃ রূপচর্চায় নারকেল তেলের ব্যবহার
- ত্বকে তেল ব্যবহারের ক্ষেত্রে আপনি শুধুমাত্র অলিভ অয়েল চয়েস করতে পারেন। কেননা অলিভ অয়েল এর প্রচুর পরিমাণ ভিটামিন প্রোটিন এ ভরপুর, যেগুলো আপনার ত্বকের অনেক উপকারে আসবে।
- ত্বকের যত্নে আপনাকে অবশ্যই প্রোটিন সমৃদ্ধ খাবার খেতে হবে। ভিটামিন বি ভিটামিন সি বেশি বেশি খেতে হবে। রঙিন ফলমূল এবং সবুজ শাকসবজি অধিক পরিমাণে খেতে হবে। এবং ফাস্টফুড ভাজাপোড়া তৈলাক্ত খাবার বর্জন করতে হবে ।
রূপচর্চায় ক্ষতিকর দিক গুলো
রূপচর্চায় মধু ও নিমের ব্যবহার এবং গুণাবলী সম্পর্কে বিস্তারিত জেনেছেন । কিন্তু অনেকেই ত্বকের অতিরিক্ত যত্ন নিতে গিয়ে ত্বকের ভালোর থেকে ক্ষতি করে ফেলে বেশি। সুতরাং ত্বকের যত্ন নিলেই হবে না বরং ত্বকের ক্ষতিকর দিকগুলোও মাথায় রাখতে হবে। এখন আমরা জানবো ত্বকের ক্ষতিকর বিষয়গুলো কি কি ?
আরো পড়ুনঃ কপালে ছোট ছোট ব্রণ দূর করার উপায়
আমরা অনেকেই কোন কিছু না জেনেই কোন কিছু বিশ্লেষণ না করেই তোকে ব্যবহার করে থাকি যার ফলে ত্বকের ক্ষতি হয়ে যায় যেগুলোর ফল ভোগ করতে হয় আমাদের নিজেদেরকেই। তাই নিজেদের সচেতনতা বৃদ্ধি করতে হবে এই রূপচর্চার বিষয়ে। অনেকে আমরা বাজার থেকে বিভিন্ন ফেরিওয়ালা কিংবা হকারদের মুখরোচক কথা শুনে বিভিন্ন ক্রিম নিয়ে বাসায় এসে ত্বকে ব্যবহার করি । যেটা মোটেও উচিত না। সাধারণত তাকে কোন কিছু ব্যবহার করাই উচিত না একমাত্র ন্যাচারাল কিছু ছাড়া যেমন তেল , মধু , নিম পাতার রস , এলোভেরা ইত্যাদি।
কিন্তু এ সকল ক্রিম আমাদের ত্বকের জন্য যে কতটুকু ক্ষতি করে সে বিষয়ে আমরা কখনোই নজর দেই না। দিনশেষে এ সকল ক্রিম ব্যবহারের ফলে আমাদের ত্বক ফোসকা পড়া কিংবা ত্বক ঝলসে যাওয়ার মত ভয়ানক পরিস্থিতি দেখা দেয়। তাই আপনাদের কাছে বিশেষ অনুরোধ সেটি হচ্ছে রূপচর্চার ক্ষেত্রে সব সময় প্রাকৃতিক উপকরণগুলো ব্যবহার করবেন। যদি অন্য কোন উপকরণ ব্যবহার করতে হয় তাহলে অবশ্যই ডাক্তারের পরামর্শ নিবেন।
শেষ কথা
প্রিয় বন্ধুগণ রূপচর্চায় মধু ও নিমের ব্যবহার সম্পর্কে জেনে যদি পোস্টটি পড়ে আপনি উপকৃত হয়ে থাকেন তাহলে অবশ্যই আপনার বন্ধুদের সাথে শেয়ার করবেন । এমন আরো উপকারমূলক পোস্ট পেতে নিয়মিত আমাদের পেজটি ভিজিট করুন। পোস্টটি পড়ে আপনার ভালো লাগলে অবশ্যই কমেন্ট করে জানাবেন । ধন্যবাদ