দুশ্চিন্তা দূর করার ২০ টি ১০০% কার্যকারী টিপস- দুশ্চিন্তা দূর করার ঔষধ এবং ইসলামিক উপায়

দুশ্চিন্তা থেকে মুক্তির ইসলামিক উপায়ের ব্যাপারে অনেকেই জানতে চাই আমরা মানুষ হিসেবে প্রত্যেকেরই বিভিন্ন ধরনের দুশ্চিন্তা রয়েছে বা থাকবেই। তাই আমাদের দুশ্চিন্তা দূর করার ইসলামিক উপায় সম্পর্কে জানা জরুরী

আপন যদি বিভিন্ন চিন্তায় পড়ে থাকেন এবং দুশ্চিন্তা দূর না হয় তাহলে আপনার জন্য আজকের এই আর্টিকেলটি উপকারে আসতে পারে। এখানে দুশ্চিন্তা দূর করার ইসলামের উপায় এবং ওষুধের নাম সম্পর্কে আলোচনা করা হবে ইনশাআল্লাহ।

দুশ্চিন্তা দূর করার ঔষধ

দুশ্চিন্তা থেকে মুক্তির ঔষধ সম্পর্কে জানার আগে আপনাকে অবশ্যই দুশ্চিন্তা কেন হয় এই বিষয়টি ভালো হবে জানতে হবে। অনেকগুলো কারণ রয়েছে মানুষ বিভিন্ন কারণে দুশ্চিন্তায় পড়ে থাকে। তবে দুশ্চিন্তা দূর করার নির্দিষ্ট কোন ঔষধ নেই। দুশ্চিন্তা থেকে নিজেকে মুক্ত রাখতে হলে মানসিকভাবে আপনাকে শান্ত থাকতে হবে।
দুশ্চিন্তার প্রধান ওষুধ হলো আপনার দুশ্চিন্তা কেন হচ্ছে কি কারনে হচ্ছে সেই কারণটা খুঁজে বের করা। এবং যে কারণে আপনার দুশ্চিন্তা হচ্ছে সেই কারণ থেকে বের হয়ে আসা। অনেক সময় আমরা একা থাকি যার ফলে আরও বেশি দুশ্চিন্তায় পড়ে যায় তাই নিজের মনের কথাগুলো অন্যকে শেয়ার করা । এতে দুশ্চিন্তা অনেক কম হওয়া সম্ভব না থাকে।
যেহেতু দুশ্চিন্তা একান্তই নিজের মনের ব্যক্তিগত ব্যাপার তাই কোন ওষুধ খাওয়া উচিত নয়। আপনার যদি অতিরিক্ত পরিমাণ চিন্তা হয়ে থাকে তাহলে আপনি একজন ভালো চিকিৎসকের পরামর্শ নিতে পারেন। নিজে নিজে কোন ঔষধ গ্রহণ করবেন না এতে দুশ্চিন্তার কারণ আরো তীব্র হতে পারে। ঔষধ খাওয়ার আগে অবশ্যই চিকিৎসকের পরামর্শ অনুযায়ী খাবেন তাহলে দুশ্চিন্তা থেকে নিজেকে মুক্ত রাখতে পারবেন।

দুশ্চিন্তার ফলে কি কি ক্ষতি হয়ে থাকে 

দুশ্চিন্তা থেকে মুক্তির ঔষধ সম্পর্কে যেহেতু আলোচনা করেছি তাই আমাদের অতিরিক্ত দুশ্চিন্তার ফলে কোন ধরনের কতগুলো ক্ষতি হয়ে থাকে এই বিষয় সম্পর্কে একটা ধারণা আমাদের রাখতে হবে।আমাদের মধ্যে অনেকেই আছে যারা সামান্য বিষয় নিয়ে অনেক বেশি চিন্তা করে থাকে।কারণে অকারণে ফলে আমাদের বিভিন্ন ধরনের শারীরিক ক্ষতি দেখা যায় যা আমরা নিজেরাও জানিনা ।
যেমন ঃ
  • পরিমান মত ঘুম না হওয়া
  • রক্তচাপ বেড়ে যাওয়া
  • হরমোন ব্যালেন্স নষ্ট হওয়া
  • হৃদরোগ হওয়া
  • বদমেজাজি  হয়ে যাওয়া
ঘুমের সমস্যা হওয়া — যদি আমরা বেশির ভাগ সময় দুশ্চিন্তায় পড়ে থাকি তাহলে প্রথমে আমাদের যে ক্ষতি টা  হয়ে থাকে সেটা পরিমান মত ঘুম না হওয়া । একজন সুস্থ মানুষের কমপক্ষে ৭ থেকে ৮ ঘন্টা ঘুমানো জরুরী । কিন্তু অতিরিক্ত দুশ্চিন্তার ফলে ঘুমের ব্যাঘাত ঘটে , ফলে শারিরিক  নানা সমস্যার সৃষ্টি হয় ।
রক্তচাপ বেড়ে যাওয়া– অতিরিক্ত দুশ্চিন্তা করলে যে সমস্যাটি বেশি দেখা যায় সেটি হল উচ্চ রক্তচাপ। উচ্চ রক্তচাপ শরীরের জন্য মারাত্মক ক্ষতিকর বয়ে আনতে পারে। যেমন উচ্চ রক্তচাপের ফলে মানুষের কমন যে বিপদ টি ঘটে সেটি হল ব্রেন স্ট্রোক । এমনিতে আমাদের রক্তচাপ সব সময় নিয়ন্ত্রণে থাকে কিন্তু আমরা অতিরিক্ত দুশ্চিন্তা করি যার ফলে আমাদের রক্তচাপ অনেকটাই বেড়ে যায়।
হরমোনাল ব্যালেন্স নষ্ট হয়ে যাওয়া–আমাদের শরীরে হরমোন ব্যালেন্স অবস্থায় থাকে। তবে আমরা যদি অতিরিক্ত পরিমাণে দুশ্চিন্তা করি তাহলে এই ব্যালেন্স অর্থাৎ নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে যেতে পারে। এই সমস্যা হলে শারিরিক বিভিন্ন ক্ষতি হয়ে থাকে ।
হৃদরোগ হওয়া–অতিরিক্ত পরিমাণে দুশ্চিন্তা করলে মানুষের হার্টের সমস্যা হয়ে থাকে। বিভিন্ন গবেষণায় দেখা যায় যে যাদের হার্টের সমস্যা রয়েছে তাদের এই সমস্যা হওয়ার অন্যতম প্রধান কারণ হলো অতিরিক্ত দুশ্চিন্তা করলে, অর্থাৎ হৃদরোগ হওয়ার প্রবণতা বেড়ে যায়।
বদমেজাজি হয়ে যাওয়া–দুশ্চিন্তা করার ফলে আপনার শারীরিক হরমোনাল ডিজব্যালেন্স হয়ে যায় যার । ফলে আপনার ছোটখাটো বিষয়ে মাথা গরম হয়ে যায় এটা খুবই অস্বাভাবিক। উচ্চ রক্তচাপ এবং হরমোনাল ডিস ব্যালেন্সের কারণে বদমেজাজি হয়ে যান। ফলে শারীরিক নানা ধরনের ক্ষতি দেখা দেয় ।

দুশ্চিন্তা দূর করার উপায় 

দুশ্চিন্তা দূর করার উপায় সম্পর্কে আমাদের জানা অত্যন্ত জরুরি ও গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হল । আমাদের স্বাস্থ্যের জন্য অত্যন্ত ক্ষতিকর একটি বিষয় তা হলো, আমরা যদি অতিরিক্ত পরিমাণে দুশ্চিন্তা করি তাহলে আমাদের শরীরে বিভিন্ন ধরনের সমস্যা দেখা দিতে পারে। এই সমস্যাগুলো সমাধানের জন্য আমাদের অবশ্যই দুশ্চিন্তা থেকে মুক্ত থাকতে হবে। এখন আমরা জানবো দুশ্চিন্তা থেকে মুক্তি পাবার উপায় সমূহঃ
  • টেনশন হলে কোথাও ঘুরতে যাওয়া
  • সবার সাথে কথা বলা
  • হাসার চেষ্টা করা
  • নিজেকে কাজে ব্যস্ত রাখা
  • সকালে ঘুম থেকে তাড়াতাড়ি ওঠা
  • খাদ্য তালিকা ঠিক রাখা
  • প্রোটিনযুক্ত খাবার খাওয়া
  • মেডিটেশন করা
  • সকালবেলা হাটাহাটি করা
টেনশন হলে কোথাও ঘুরতে যাওয়া–  যাদি আপনি টেনশন দূর করতে না পারেন তখন আপনার জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ কাজ হল সমস্ত কিছু রেখে ঘুরতে যাওয়া । কারণ আপনি যখন ঘুরতে যাবেন তখন আপনার মানসিক চাপ মুক্ত হবে , টেনশন মুক্ত হবে , আপনার দুশ্চিন্তাও দূর হয়ে যাবে। ঘুরতে যাওয়ার জন্য আপনি বিভিন্ন জায়গা নির্বাচন করতে পারেন এর মধ্যে রয়েছে কক্সবাজার , সাজেক বান্দরবন , সুন্দরবন ইত্যাদি ।
সবার সাথে কথা বলা— সাধারণত দুশ্চিন্তার ফলে আমরা লোকালয় থেকে দূরে থাকি । নিজেকে একা রাখার চেষ্টা করি, আবদ্ধ একটি ঘরের মধ্যে নিজেকে বন্দী রাখি, এর ফলে দুশ্চিন্তা কমে না বরং বাড়ে। এর জন্য আপনি যেটা করতে পারেন সেটি হল, বেশি বেশি মানুষের সাথে মেলামেশা করুন, কথা বলুন, তাদের সাথে নিজের কষ্টের কথা শেয়ার করুন, এর ফলে আপনার দুশ্চিন্তা কমবে ।
হাসার চেষ্টা করুন–অতিরিক্ত পরিমাণে দুশ্চিন্তা করলে আমাদের মুখ দিয়ে হাসি বের হয় না সাধারণত তাই আমরা আরো বেশি দুশ্চিন্তায় পড়ে যাই যদি। আপনি দুশ্চিন্তা মুক্ত হতে চান তাহলে আপনাকে অবশ্যই হাসার চেষ্টা করতে হবে এবং হাসি খুশি থাকতে হবে ।
নিজেকে কজে ব্যাস্ত রাখা– আপনার যখন দুশ্চিন্তা হবে তখন যদি আপনি বাসায় বসে থাকেন সেক্ষেত্রে দুশ্চিন্তা আরও আপনার ঘাড়ে চেপে বসতে পারে । আপনি যে কোন কাজে লেগে পড়েন সেটা যেকোনো ধরনের কাজ হতে পারে । আপনার বাসার কাজ , বাহিরের কাজ, ক্ষেতের কাজ, এতে আপনার দুশ্চিন্তা দূর হবে ।
সকালে ঘুম থেকে তাড়াতাড়ি ওঠা– বেশিরভাগ সময় আমরা রাতে সঠিকভাবে ঘুমাই না এবং সকালে সঠিক সময় ঘুম থেকে উঠি না যার ফলে শরীর অতিরিক্ত পরিমাণ অসুস্থ হয়ে যায় । সকালে ঘুম থেকে তাড়াতাড়ি উঠার চেষ্টা করুন ।
 
খাদ্য তালিকা ঠিক রাখা–অনেক সময় আমরা দুশ্চিন্তার কারণে খাওয়া-দাওয়া ছেড়ে দেই এর ফলে আমাদের শারীরিক নানা ধরনের জটিলতা সৃষ্টি করে আপনি যদি দুশ্চিন্তা মুক্ত থাকতে চান তাহলে অবশ্যই খাবার নিয়মিত গ্রহণ করুন ।
প্রোটিন যুক্ত খাবার খাওয়া— খাদ্য তালিকা ঠিক রাখার পাশাপাশি আমাদের খাদ্যের পুষ্টিগণের দিকেও খেয়াল রাখতে হবে। অতিরিক্ত চিন্তার ফলে আপনার শারীরিক যে ঘাটতি হয় প্রোটিন যুক্ত খাবার না খেলে আপনার শরীর আরো খারাপ হতে পারে । এতে আপনার দুশ্চিন্তা দূর হবার থেকে আরো দ্বীগুন হয়ে যাবার সম্ভাবনা থাকে ।
মেডিটেশন করা — চিন্তা থেকে মুক্তি পাবার আরো অন্যতম একটি পদ্ধতি অবলম্বন করা হয় সেটি হল মেডিটেশন করা। মেডিটেশন হলো এক ধরনের ব্যায়াম। বৈজ্ঞানিক পরীক্ষা দ্বারা প্রমাণিত যে আপনি যদি দুশ্চিন্তা মুক্ত হতে চান তাহলে অবশ্যই আপনাকে নিয়মিত মেডিটেশন করতে হবে হবে ।
সকাল বেলা হাটাহাটি করা– সকালবেলা হাটাহাটি করার অভ্যাস গড়ে তুলুন। সকালবেলা শীতল আবহাওয়ায় কিছুক্ষণ হাটা আমাদের শরীরের জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। সকলের ঠান্ডা শীতল হাওয়াতে হাটাহাটি করার উপকারিতা অনেক বেশি । তাই সকালে হাটাহাটি করার অভ্যাস গড়ে তুলুন।

ডিপ্রেশন থেকে মুক্তির ঔষধ

ডেপ্রেশন থেকে মুক্তির ওষুধ সম্পর্কে জানতে চান ? আমরা ইতিমধ্যে দুশ্চিন্তা থেকে মুক্তির ঔষধ সম্পর্কে আলোচনা করেছি। কোনো ঔষধ খেলেও আপনার দুশ্চিন্তা দূর হবে না । আপনি যদি দুশ্চিন্তা থেকে মুক্তি পেতে চান তবে অবশ্যই আপনাকে মন থেকে দুশ্চিন্তা দূর করতে হবে। ইতেমধ্যে দুশ্চিন্তা দূর করার বেশ কিছু উপায় উল্লেখ করা হয়েছে।
এর পরেও যদি দুশ্চিন্তা দূর না হয় তবে অবশ্যাই আপনাকে একজন মেডিসিন বিষেশজ্ঞের পরামর্শ নিতে হবে। তিনি আপনার সমস্যার কথা বিস্তারিত শুনবে পরিক্ষা নিরিক্ষা প্রয়োজন হলে দিবেন এর পরে আপনাকে ঔষধ প্রেস্ক্রাইভ করবে । এছাড়া আপনি  নিজে নিজে ঔষধ সেবন করা থেকে নিজেকে বিরত রাখবেন। ডিপ্রেস ৫ এমজি ট্যাব্লেট পরামর্শ অনুযায়ী দেওয়া হয়ে থাকে।

দুশ্চিন্তা দূর করার ইসলামিক উপায় 

দুশ্চিন্তা থেকে মুক্তির ইসলামী উপায় সম্পর্কে জানতে আপনি সঠিক জায়গাতে এসেছন। ইসলামের মধ্যে সকল বিষয়ের সমাধান রয়েছে ।কোন কারনে যদি আপনার অতিরিক্ত পরিমাণে দুশ্চিন্তা হয়ে থাকে তবে আপনি অবশ্যই ইসলামিক নিয়ম গুলো মেনে খুব সহজেই চিন্তা মুক্ত হতে পারেন ।
নিম্নে তা উল্লেখ্য করা হলোঃ
  • আল্লাহ তাআলার ব্যাপারে সুধারণা রাখতে হবে
  • তাকদিরের ওপর বিশ্বাস রাখতে হবে
  • পরকালের কথা স্মরণ করতে হবে
  • কোরআন মাজীদ তেলাওয়াত করতে হবে
  • কোরআন মাজীদের তেলাওয়াত শুনতে হবে
  • বেশি বেশি ইস্তেগফার পাঠ করতে হবে
  • সর্ব অবস্থায় ধৈর্য ধারণ করতে হবে
  • পাঁচ ওয়াক্ত সালাত আদায় করতে হবে
আল্লাহ তাআলার ব্যাপারে সুধারণা রাখা–আমরা যখন কোন বিপদের মধ্যে পড়ি তখন সাধারণত আমরা আল্লাহর উপরে দোষারোপ করি। এটা মোটেও ঠিক নয়। আল্লাহতায়ালা আমাদের বিভিন্ন বিপদের মাধ্যম দিয়ে পরীক্ষা নিয়ে থাকেন। কাজেই আল্লাহর ওপরে আমাদের সুধারণা রাখতে হবে ।
তাকদিরের ওপর বিশ্বাস করা–দুশ্চিন্ত দূর করতে অবশ্যই আপনাকে ইসলামিক মাইন্ডের হতে হবে । আপনার জীবনে যা কিছু ঘটুক না কেন , সেটা ভালো হোক বা খারাপ হোক অবশ্যই বিশ্বাস করতে হবে এটা আপনার তকদিরে ছিলো ।
পরকালের কথা স্মরণ করা — আমরা যখন কোন বিপদে পড়ি তখন আমরা আল্লাহর কথা পরকালের কথা চিন্তা না করে সেটা অন্যভাবে সংশোধন করার চেষ্টা করি ।এবং আল্লাহর উপর বিশ্বাস হারিয়ে ফেলি এটা মোটেও করা উচিত নয় । আপনি দুশ্চিন্তা দূর করতে চাইলে অবশ্যই আপনাকে আল্লাহর উপর ভরসা রাখতে হবে ।
কুরআন মাজীদ তেলাওয়াত করা — দুশ্চিন্তা দূর করার জন্য কুরআন মাজীদ তেলাওয়াত করার ফজিলত অপরিশীম। আপনি যতই দুশ্চিন্তার মধ্যে থাকুন না কেন যদি আপনি কোরআন তেলাওয়াত করেন অবশ্যই আপনি দুশ্চিন্তা থেকে মুক্ত হবেনই হবেন ইনশাআল্লাহ ।
কুরআন তেলাওয়াল শোনা— দুশ্চিন্তা থেকে মুক্ত পেতে কুরাআন তেলাওয়াল করা অন্যতম। কিন্তু যদি কুরআন তেলাওয়াত করতে না পারেন তবে তেলাওয়াত শুনতে হবে । এতে করে আপনার দুশ্চিন্তা দূর হবে ইনশাআল্লাহ ।
বেশী বেশী ইস্তেগফার করা— নিজেকে দুশ্চিন্তা থেকে মুক্ত রাখার আর একটি প্রধান উপায় হল বেশি বেশি ইস্তেগফার পাঠ করা। আমরা আমাদের অজান্তে অনেক ধরনের পাপে লিপ্ত হয়ে থাকি। সব সময় আল্লাহ তাআলার কাছে ইস্তেগফার অর্থাৎ ক্ষমা চাইতে হবে।
সর্ব অবস্থায় ধৈর্য ধারণ করা–দুশ্চিন্তা থেকে মুক্তি পাবার আরেকটি অন্যতম উপায় হলো ধৈর্য ধারণ করা। ধৈর্য ধারণ কারীদের সাথে অবশ্যই আল্লাহ রয়েছেন। আপনি যদি ধৈর্য ধারণ করতে পারেন যেকোনো কাজে এবং দুশ্চিন্তা না করে আল্লাহর উপর ছেড়ে দেন তাহলে সকল কাজে সফল হতে পারবেন ইনশাআল্লাহ।
পাঁচ ওয়াক্ত সালাত আদায় করতে হবে–নামাজ আদায় করা এটি একটি ফরজ ইবাদত। একজন মুসলিম হিসেবে আমাদের অবশ্যই নামাজ সঠিক সময়ে আদায় করা জরুরী এবং ফরজ। তাই আপনি যদি দুশ্চিন্তা থেকে মুক্ত হতে চান তাহলে অবশ্যই নিয়মিত নামাজ পড়া শুরু করুন।

দুশ্চিন্তা থেকে মুক্তির দোয়া  

দুশ্চিন্তা থেকে মুক্তির ওষুধ সেবন করে কোন লাভ নেই । দুশ্চিন্তা থেকে মুক্ত হতে হলে অবশ্যই আল্লাহর নির্দেশনা অবলম্বন করতে হবে। এবং আল্লাহর কাছে দোয়া প্রার্থনা করতে হবে। একমাত্র আল্লাহ তায়ালাই পারেন আমাদের দুশ্চিন্তা মুক্ত করতে। সমস্ত সমস্যা গুলো সমাধান করে দিতে। দুশ্চিন্তা থেকে মুক্ত পেতে রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কিছু দোয়া শিক্ষা দিয়েছেন যেগুলো আমরা নিয়মিত পাঠ করলে দুশ্চিন্তা থেকে মুক্তি পেতে পারবো।
একজন মুমিন কখনো হতাশ কিংবা দুশ্চিন্তাগ্রস্থ হয় না। হাদিসে বেশ কিছু দোয়া শিক্ষা দেওয়া হয়েছেে এই দোয়া গুলো বেশি বেশি পড়ুন দেখবেন আপনার দুশ্চিন্তা ক্রমে ক্রমে দূর হয়ে যাবে ইনশাআল্লাহ।
এক হাদীসে রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন আমি এমন একটা দোয়া সম্পর্কে অবগত করছি।কোন বিপদগ্রস্ত লোক পাঠ করলে আল্লাহ তাআলা তার সেই বিপদ দূর করে দেন সেটি হচ্ছে দোয়া ইউনুস আলাইহিস সালামের দোয়া
আরবি  : لاَ إِلَهَ إِلاَّ أَنْتَ سُبْحَانَكَ إِنِّي كُنْتُ مِنَ الظّالِمِينَ
উচ্চারণ : লা ইলাহা ইল্লা আনতা সুবহানাকা ইন্নি কুনতু মিনাজ জ্বালিমিন।
অর্থ : হে আল্লাহ! তুমি ছাড়া কোনো সত্য উপাস্য নেই ,আমি তোমার পবিত্রতা বর্ণনা করছি। নিঃসন্দেহে আমি নিজের প্রতি অবিচার করেছি।
(তিরমিজি, হাদিস : ৩৫০৫)
রাসুল (সাঃ) চিন্তা ও পেরেশানির জন্য একটি বিষেশ দোয়াটি পড়তেন । দোয়া টি হলো ঃ
আরবি: إِنِّي أَعُوذُ بِكَ مِنَ الهَمِّ وَالحَزَنِ، وَالعَجزِ وَالكَسَلِ، وَالبُخلِ وَالجُبنِ، وَضَلَعِ الدَّينِ وَقَهْرِ الرِّجَالِ
উচ্চারণ : আল্লাহুম্মা ইন্নি আউজু বিকা মিনাল হাম্মি ওয়াল হুযনি, ওয়া আউজু বিকা মিনাল আজযি ওয়াল-কাসালি, ওয়া আউজু বিকা মিনাল বুখলি ওয়াল জুবনি, ওয়া আউজু বিকা মিন গালাবাতিদ দাইনি ওয়া কাহরির রিজাল।
অর্থ : হে আল্লাহ! নিশ্চয়ই আমি আপনার আশ্রয় নিচ্ছি দুশ্চিন্তা ও দুঃখ থেকে, অপারগতা ও অলসতা থেকে, কৃপণতা ও ভীরুতা থেকে, ঋণের ভার ও মানুষদের দমন-পীড়ন থেকে।
আনাস (রা.) বর্ণনা করেন, রাসুল (সাঃ) চিন্তাগ্রস্ত অবস্থায় এই দো’য়া পড়তেন।
( সহিহ বুখারি, হাদিস নং : ২৮৯৩)
আরবি: اللَّهُمَّ رَحْمَتَكَ أَرْجُو، فَلاَ تَكِلْنِي إِلَى نَفْسِي طَرْفَةَ عَيْنٍ، وَأَصْلِحْ لِي شَأْنِي كُلَّهُ، لاَ إِلَهَ إِلاَّ أَنْتَ
উচ্চারণ: আল্লা-হুম্মা রহ্‌মাতাকা আরজু ফালা তাকিলনী ইলা নাফসী ত্বারফাতা ‘আইন, ওয়া আসলিহ্ লী শা’নি কুল্লাহু, লা ইলা-হা ইল্লা আনতা)।
অর্থ: “হে আল্লাহ! আমি আপনার রহমতেরই আশা করি। তাই আপনি এক নিমেষের জন্যও আমাকে আমার নিজের কাছে সোপর্দ করবেন না। আপনি আমার সার্বিক বিষয়াদি সংশোধন করে দিন। আপনি ছাড়া কোনো হক্ব ইলাহ নেই।”
সুনানে আবূ দাউদ, ৪/৩২৪, নং ৫০৯০; আহমাদ ৫/৪২, নং ২০৪৩০।
শাইখ নাসির উদ্দিন আলবানী রহিমাহুল্লাহ সহীহ আবু দাউদ গ্রন্থে ৩/৯৫৯ এটাকে হাসান হাদীস বলেছেন।
আরবি: إِلَهَ إِلاَّ اللَّهُ الْعَظِيمُ الْحَلِيمُ، لاَ إِلَهَ إِلاَّ اللَّهُ رَبُّ الْعَرْشِ الْعَظِيمِ، لاَ إِلَهَ إِلاَّ اللَّهُ رَبُّ السَّمَوَاتِ وَرَبُّ الْأَرْضِ وَرَبُّ الْعَرْشِ الْكَرِيمِ
উচ্চারণ: লা ইলা-হা ইল্লাল্লা-হুল ‘আযীমূল হালীম। লা ইলা-হা ইল্লাল্লা-হু রব্বুল ‘আরশিল ‘আযীম। লা ইলাহা ইল্লাল্লা-হু রব্বুস সামা-ওয়া-তি ওয়া রব্বুল আরদ্বি ওয়া রব্বুল ‘আরশিল কারীম)।
অর্থ: “আল্লাহ ছাড়া কোনো হক্ব ইলাহ নেই, তিনি মহান ও সহিষ্ণু। আল্লাহ ছাড়া কোনো হক্ব ইলাহ নেই, তিনি মহান আরশের রব্ব। আল্লাহ ছাড়া কোনো হক্ব ইলাহ নেই, তিনি আসমানসমূহের রব্ব, যমীনের রব্ব এবং সম্মানিত ‘আরশের রব্ব।
(সহীহুল বুখারী, (ফাতহুল বারীসহ) ৭/১৫৪, নং ৬৩৪৫; সহীহ মুসলিম ৪/২০৯২, নং ২৭৩০

হতাশা দূর করার উপায়

হতাশা দূর করার উপায় সম্পর্কে আমরা ইতিমধ্যেই বিস্তারিত আলোচনা করেছি । আপনি যদি উপরের আলোচনাগুলো মনোযোগ সহকারে পড়ে থাকেন তাহলে নিজেকে হতাশা থেকে মুক্ত উপায় সম্পর্কে অবশ্যই জানতে পেরেছেন। দুশ্চিন্তা থেকে আমাদের মনে হতাশা চলে আসে সাধারণত আমরা যখন কোন কাজ করতে পারি না ।
অথবা আমরা যে কাজটি করতে পারিনি অন্য কেউ যদি ওই কাজটি করে ফেলে তখন আমরা অতিরিক্ত পরিমাণে হতাশ হয়ে যায়। এখন এই হতাশা থেকে মুক্তি হতে হলে  আমাদেরকে নিজের প্রতি বিশ্বাস রাখতে হবে এবং মহান সৃষ্টিকর্তা আল্লাহর প্রতি আস্থা রাখতে হবে। আমরা আগেই মনে করে থাকি যে আমরা এই কাজটি করতে পারবো না ,ফলে কাজটি করতে কঠিন হয়ে যায়।
তাই হতাশা থেকে মুক্তি পাওয়ার অন্যতম প্রধান উপায় হচ্ছে নিজেকে আত্মবিশ্বাসে করে তোলা। এরপরে যে বিষয়ের উপরে আমরা হতাশ হচ্ছি সে বিষয়টি নিয়ে রিসার্চ করা। নিজেকে হতাশ হওয়া থেকে মুক্ত করার জন্য সেই কাজটি বাদ দেওয়া এবং অন্য কাজের  দিকে মনোযোগী হওয়া। এছাড়াও বেশ কিছু উপায় রয়েছে যেগুলো অনুসরণ করে আমরা হতাশ মুক্ত হতে পারব ।

লেখকের শেষ মন্তব্য

প্রিয় বন্ধুরা দুশ্চিন্তা থেকে মুক্তির ঔষধ সম্পর্কে বিস্তারিত আলোচনা করার চেষ্টা করেছি। আপনি যদি অতিরিক্ত পরিমাণে দুশ্চিন্তা করে থাকেন তাহলে ডাক্তারের পরামর্শ ছাড়া কখনো কোন ওষুধ সেবন করবেন না। ওষুধ না খেয়ে যে সফল উপায়ে নিজেকে দুশ্চিন্তা মুক্ত করা যায় সেই উপায়গুলো অবলম্বন করার চেষ্টা করুন । আশা করছি এই বিষয়গুলো অবলম্বন করলে আপনি খুব সহজে নিজের দুশ্চিন্তাকে মুক্ত করতে সক্ষম হবেন ইনশাআল্লাহ ।
এতক্ষণ আমাদের আর্টিকেলের সঙ্গে থাকার জন্য অসংখ্য ধন্যবাদ আপনি যদি এই ধরনের তথ্যমূলক আর্টিকেল নিয়মিত পেতে চান তাহলে অবশ্যই আমাদের পেজটি নিয়মিত ভিজিট করুন ফলো দিয়ে সাথেই থাকুন শেয়ার করুন । ধন্যবাদ

Leave a Comment