দাঁতের ফিলিং খরচ কত? তা জেনে রাখলে দাঁত ফিলিং করার ক্ষেত্রে কত টাকা খরচ হতে পারে, তা বুঝতে পারবেন। দাঁতের ফিলিং খরচ কত? সেই বিষয় সম্পর্কে নিচে বিস্তারিত তথ্য তুলে ধরা হয়েছে। আসুন তাহলে দেখে নেয়া যাক, দাঁতের ফিলিং খরচ সম্পর্কে?
পেজ সূচিপত্র: দাঁতের ফিলিং খরচ কত
ভূমিকা
অনেকেই দাঁতের সমস্যায় ভুগে থাকে। দাঁতের সমস্যা খুবই জটিল এক ধরনের সমস্যা। আপনার দাঁতে যদি সমস্যা থাকে, সেক্ষেত্রে তা আপনার জন্য খুবই কষ্টের কারণ হবে। দাঁতের ব্যথা অত্যন্ত যন্ত্রণাদায়ক হয়ে থাকে। এছাড়া দাঁতের সমস্যা থাকলে খাওয়া দাওয়া ভালোভাবে করা যায় না। ফলে শরীর দুর্বল হয়ে পড়ে। এক কথায় যদি দাঁতের সমস্যা থাকে তাহলে তা সম্পূর্ণ শরীরকে প্রভাবিত করে।
আর এ কারণেই দাঁতের সমস্যা দেখা দিলে যত দ্রুত সম্ভব চিকিৎসা গ্রহণ করতে হবে। বর্তমানে দাঁতের যতগুলো সমস্যা রয়েছে, তার মধ্য থেকে সবথেকে কমন সমস্যা হলো দাঁতের গর্তের সৃষ্টি হওয়া। আর তাতে যদি গর্তের সৃষ্টি হয় তাহলে তার ফিলিং করে নিতে হয়। এখন প্রশ্ন হল দাঁতের ফিলিং খরচ কত? আপনি যদি এই বিষয়ে সম্পর্কে বিস্তারিত তথ্য জানতে চান তাহলে প্রথম থেকে শেষ পর্যন্ত সম্পূর্ণ আর্টিকেলটি মনোযোগ দিয়ে পড়ুন।
দাঁতের ফিলিং খরচ কত
আপনার দাঁতের ক্ষত কথাটা গভীর এবং আপনার কয়টি দাঁতে এই ধরনের সমস্যা রয়েছে, তার উপরে দাঁতের ফিলিং খরচ নির্ভর করবে। আপনার দাঁতের ক্ষয়ে যাওয়া অংশে যদি সামান্য পরিমাণে হয় সেক্ষেত্রে খরচ কম হবে।
আর যদি আপনার দাঁতের ক্ষত অনেক বড় হয় এবং অনেকগুলো দাঁতে এই ধরনের সমস্যা দেখা দেয় তাহলে খরচ কিছুটা বেশি হবে। তবে দাঁতের ফিলিং খরচ আরো অন্যান্য বিষয়ের উপরেও অনেকটা নির্ভর করে। বিশেষ করে আপনি যদি সাধারণ কোন হাসপাতালে চিকিৎসা করান, সেক্ষেত্রে একটু কম হতে পারে।
পক্ষান্তরে যদি আপনি ভিআইপি হাসপাতাল অথবা ক্লিনিকে যদি দাঁতের ফিলিং করান, সেক্ষেত্রে খরচ কিছুটা বেশি হতে পারে। যাইহোক সাধারণত বাংলাদেশে দাঁতের ফিলিং করার জন্য দুই হাজার টাকা থেকে পাঁচ হাজার টাকা পর্যন্ত খরচ হতে পারে। অথবা ক্ষেত্রবিশেষে আরও বেশি টাকার প্রয়োজন পড়তে পারে।
দাঁতের ক্ষয় রোধের উপায়
দাঁতের ফিলিং খরচ কত? আশা করি তা জানতে পেরেছেন। কেননা উপরে সেই বিষয় সম্পর্কে বিস্তারিত আলোচনা করা হয়েছে। নিচে দাঁতের ক্ষয় রোধের উপায় সমূহ বিস্তারিতভাবে উল্লেখ করা হয়েছে। নিম্ন বর্ণিত তথ্য গুলো মনোযোগের শহীদ পড়লে দাঁতের ক্ষয় রোধের উপায় সম্পর্কে জানতে পারবেন।
দাঁতের ক্ষয় হল একটি সাধারণ দাঁতের সমস্যা যা বিভিন্ন কারণে হতে পারে। তাই আপনি যদি তাদের ক্ষয়রোধ করতে চান, সেক্ষেত্রে অবশ্যই আপনাকে দাঁত ক্ষয়ে যাওয়ার কারণ গুলো সম্পর্কে জানতে হবে এবং সেগুলো প্রতিরোধ করতে হবে। যাইহোক নিচে দাঁতের ক্ষয় রোধের উপায় সমূহ সম্পর্কে বিস্তারিত তথ্য তুলে ধরা হবে।
- নিয়মিত দাঁত ব্রাশ করুন: প্রতিদিন দুবার, দুই মিনিট সময় নিয়ে দাঁত ব্রাশ করুন। নরম ব্রাশ এবং ফ্লোরাইডযুক্ত টুথপেস্ট ব্যবহার করুন। আপনি যদি শক্ত ব্রাশ ব্যবহার করেন সেক্ষেত্রে কিন্তু আপনার দাঁতের এনামেল ক্ষয়ে যেতে পারে। তাই অবশ্যই নরম ব্রাশ ব্যবহার করতে হবে। আর যদি আপনি ফ্লোরাইডযুক্ত টুথপেস্ট ব্যবহার না করেন, তাহলে তা আপনার মুখের ব্যাকটেরিয়া দূর করতে সক্ষম হবে না। তাই অবশ্যই ফ্লোরাইডযুক্ত টুথপেস্ট ব্যবহার করতে হবে।
- দাঁত ফ্লসিং করুন: প্রতিদিন অন্ততপক্ষে একবার দাঁত ফ্লসিং করুন। ফ্লসিং করলে তা দাঁতের ফাঁকে জমে থাকা খাবার এবং ব্যাকটেরিয়া দূর করতে সাহায্য করে। তাই নিয়মিত যদি আপনি ফ্লসিং করেন তাহলে আপনার দাঁত থাকবে যে কোন মুক্ত এবং শক্তিশালী। তাই দাঁতের ক্ষয়ে যাওয়া রোধ করতে ফ্লসিং করা খুবই গুরুত্বপূর্ণ।
- চিনিযুক্ত খাবার এবং পানীয় এড়িয়ে চলুন: চিনিযুক্ত খাবার এবং পানীয় ব্যাকটেরিয়ার বৃদ্ধি ত্বরান্বিত করে, যা দাঁতের ক্ষয়ের কারণ হতে পারে। আর এ কারণেই আপনাকে অতিরিক্ত চিনি যুক্ত খাবার পরিহার করতে হবে।
আরো পড়ুন: দাঁতের ফিলিং করার পর করণীয়
- ফ্লোরাইডযুক্ত পানি দিয়ে গড়গড়া করুন: ফ্লোরাইড দাঁতকে শক্তিশালী করতে সাহায্য করে। আর তাই নিয়মিতযুক্ত পানি দিয়ে গড়গড়া করা উচিত। এতে করে আপনার দাঁত হলে অনেক মজবুত এবং আপনার দাঁত ক্ষয়ে যাওয়ার সম্ভাবনা অনেক কমে যাবে।
- নিয়মিত দাঁতের ডাক্তারের কাছে যান: নিয়মিত ডাক্তারের মাধ্যমে আপনার দাঁত পরীক্ষা নিরীক্ষা করে নিতে হবে। আপনি যদি নিয়মিত দাঁত পরীক্ষা করেন, তাহলে আপনার দাঁতের যদি কোন ধরনের সমস্যা দেখা দেয় তাহলে তার প্রাথমিক অবস্থাতেই চিকিৎসা করতে পারবেন। হলে অল্প সময়ের মধ্যেই সে সমস্যা দূর করা সম্ভব হবে।
- ফল এবং শাকসবজি খান: আপনি যদি দাঁত সুস্থ রাখতে চান তাহলে পর্যাপ্ত পরিমাণে ফল এবং শাকসবজি খেতে হবে। কেননা শাকসবজি এবং ফলমূলের প্রচুর পরিমাণে ফ্লোরাইড এবং অন্যান্য উপাদান রয়েছে যা দাঁত সুস্থ ও শক্তিশালী রাখে।
- দুধ এবং দুগ্ধজাত পণ্য খান: আপনি যদি দাঁত সুস্থ রাখতে চান সে ক্ষেত্রে অবশ্যই আপনাকে দুধ ও দুগ্ধ জাত খাবার খেতে হবে। এগুলি ক্যালসিয়াম এবং ফসফরাস সমৃদ্ধ যা দাঁতের এনামেলকে শক্তিশালী করতে সাহায্য করে।
- ধূমপান ত্যাগ করুন: আপনি যদি আপনার দাঁত সুস্থ রাখতে চান সে ক্ষেত্রে অবশ্যই আপনাকে ধূমপান সম্পূর্ণরূপে পরিহার করতে হবে আপনি যদি ধূমপান সম্পূর্ণরূপে পরিহার না করেন তাহলে কিন্তু আপনার দাঁতে বিভিন্ন ধরনের সমস্যা দেখা দিতে পারে।
দাঁতের ফিলিং করার পর করণীয়
আপনি যদি উপরের লেখা তো তথ্যগুলো পড়ে থাকেন, তাহলে নিশ্চয়ই জানতে পেরেছেন যে, দাঁতের ফিলিং খরচ কত? কেননা দাঁতের ফিলিং খরচ সম্পর্কে ইতিমধ্যেই উপরে বিস্তার আলোচনা করা হয়েছে। দাঁতের ফিলিং করার পর করণীয় কাজসমূহ সম্পর্কে নীচে বিস্তারিত আলোচনা করা হবে। তাই যদি আপনি দাঁতের ফিলিং করে থাকেন সেক্ষেত্রে নিম্ন বর্ণিত তথ্যগুলো আপনার জন্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ।
- শক্ত জিনিস না চাবানো: দাত ফিলিং করার পর প্রথম ২৪ ঘন্টা শক্ত কোন জিনিস চাবানো থেকে সম্পূর্ণরূপে বিরত থাকতে হবে। পর্যন্ত দাঁতের ফিলিং শক্ত হয় না, ফলে যদি আপনি সেই সময় সত্য কোন জিনিস চালান তাহলে দাঁতের ফিলিং খুলে চলে আসতে পারো তাই রাতের ফিলিম মজবুত রাখতে অবশ্যই আপনাকে ২৪ ঘন্টা পর্যন্ত যাবতীয় শক্তি খাবার খাওয়া থেকে বিরত থাকতে হবে।
- ব্যথানাশক ওষুধ সেবন করা: যদি কোন কারনে ফিলিংয়ের জায়গায় ব্যথা অনুভূত হয়, সেক্ষেত্রে অবশ্যই আপনাকে ব্যথানাশক ওষুধ সেবন করতে হবে। সাধারণত ডাক্তারগণ ব্যথানাশক ঔষধ প্রেসক্রাইব করে থাকেন।
- নিয়মিত দাঁত ব্রাশ করা: ফিলিংয়ের পরে অবশ্যই আপনার দাঁত পরিষ্কার রাখতে হবে। যদি আপনি দাঁত পরিষ্কার না রাখেন তাহলে ক্ষতিগ্রস্ত হতে পারে, এমনকি পুনরায় ক্ষত হয়ে যেতে পারে অবশ্যই পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন রাখতে হবে।
- নিয়মিত চেকআপ করা: প্রতি ছয় মাস পর পর অবশ্যই আপনাকে ডাক্তারের পরামর্শ গ্রহণ করতে হবে এবং প্রয়োজনীয় চেকআপ করে নিতে হবে এবং দেখতে হবে যে আপনার দাঁতের কোনো ধরনের সমস্যা রয়েছে কিনা।
শেষ কথা
দাঁতের ফিলিং খরচ কত? সে বিষয় সম্পর্কে উপরে যে সকল তথ্য তুলে ধরা হয়েছে আশা করি সেই তথ্যগুলো আপনার অনেক উপকারে এসেছে। এই আর্টিকেলটিতে বর্ণিত তথ্যসমূহ যদি আপনার কাছে ভালো লেগে থাকে তাহলে অবশ্যই সকলের সাথে শেয়ার করবেন। ১৬৪১৩