রংপুর কিসের জন্য বিখ্যাত? এই প্রশ্নের সঠিক উত্তর জেনে নেয়ার জন্য প্রথম থেকে শেষ পর্যন্ত সম্পূর্ণ আর্টিকেলটি পড়ুন। নিম্ন বর্ণিত তথ্য গুলো মনোযোগ দিয়ে পড়লে রংপুর কিসের জন্য বিখ্যাত? তা জানতে পারবেন। আসুন তাহলে দেখে নেয়া যাক, রংপুর কিসের জন্য বিখ্যাত?
পেজ সূচিপত্র: রংপুর কিসের জন্য বিখ্যাত – রংপুর কোন খাবারের জন্য বিখ্যাত
ভূমিকা
বাংলাদেশের বহু প্রাচীন একটি জনপদ হল রংপুর। পূর্বে রংপুর ছিল একটি জেলা, পরবর্তীতে রংপুর জেলাকে বিভাগে রূপান্তরিত করা হয়। রংপুর জেলার নিজস্ব সংস্কৃতি ও ঐতিহ্য রয়েছে। রংপুর বিভাগে এমন কিছু জায়গা স্থান ও খাবার রয়েছে যেগুলোর মাধ্যমে রংপুর বিভাগ পরিচিতি লাভ করেছে।
রংপুর বিভাগ বাংলাদেশের উত্তর-পশ্চিমাঞ্চলে অবস্থিত। এটি বাংলাদেশের একটি বৃহত্তম বিভাগ, রংপুর বিভাগের আয়তন প্রায় ২১,০০০ বর্গ কিলোমিটার। রংপুর বিভাগে মোট ছয়টি জেলা রয়েছে। সেগুলো হল: রংপুর, দিনাজপুর, নীলফামারী, কুড়িগ্রাম, গাইবান্ধা এবং লালমনিরহাট।
রংপুর কিসের জন্য বিখ্যাত
রংপুরের বেশ কয়েকটি দর্শনীয় স্থান রয়েছে। যেগুলোর মাধ্যমে সারাদেশে এমনকি বৈশ্বিকভাবেও রংপুর বিভাগ পরিচিতি লাভ করেছে। যে সকল জিনিসের কারণে রংপুর বিখ্যাত হয়েছে সেগুলো সম্পর্কে নিচে বিস্তারিত তথ্য তুলে ধরা হবে।
তাই আপনি যদি মনোযোগ সহকারে নিম্ন বর্ণিত তথ্যগুলো পড়েন, তাহলে রংপুরের বিখ্যাত ও ঐতিহ্যবাহী স্থানগুলো সম্পর্কে বিস্তারিত তথ্য জেনে নিতে পারবেন। আপনি যদি রংপুর ভ্রমণ করতে চান সেক্ষেত্রে নিম্ন বর্ণিত তথ্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ। বাংলাদেশের বিভিন্ন স্থান থেকে প্রতি বছর নিম্ন বর্ণিত স্থানগুলো ভ্রমণ করার জন্য প্রচুর মানুষ ছুটে আসে।
- রংপুর চিড়িয়াখানা: রংপুর বিভাগের অন্যতম আকর্ষণীয় একটি স্থান হলো রংপুর চিড়িয়াখানা রংপুর চিড়িয়াখানায় বিভিন্ন ধরনের প্রাণী রয়েছে বাঘ ভাল্লুক থেকে শুরু করে অনেক দুষ্প্রাপ্য প্রাণী রয়েছে রংপুরের চিড়িয়াখানায় সারা দেশ থেকে অনেক মানুষ রংপুর চিড়িয়াখানা ভ্রমণ করার জন্য আসে।
- ভিন্নজগত পার্ক: বাংলাদেশের অন্যতম একটি জনপ্রিয় ভ্রমণ স্পট হল ভিন্ন জগৎ আর এই ভিন্ন জগত রংপুরে অবস্থিত। সারা বছর বাংলাদেশের বিভিন্ন জায়গা থেকে ভিন্ন জগৎ পার্ট ভ্রমণ করার জন্য ভ্রমণ পিপাসুরা এসে থাকে। শুধু তাই নয় রংপুরের সিনেমা এবং নাটকের অভিনয় করা হয়ে থাকে।
- পায়রাবন্দ: পায়রাবন্দ গ্রাম রংপুরের আরেকটি বিখ্যাত জায়গা জন্মগ্রহণ করেছিলেন বেগম রোকেয়া। তিনি ছিলেন বিখ্যাত কোভিদ সাহিত্যিক এবং সমাজ সংস্কারক। আর তাই অনেক মানুষ পায়রাবন্দ গ্রামে বেগম রোকেয়ার বাড়ির ভ্রমণে আসেন।
- তাজহাট রাজবাড়ী: তাজহাট জমিদার বাড়ি রংপুরের আরেকটি অন্যতম ভ্রমণ স্পট। হুসাইন মোহাম্মদ এরশাদ ক্ষমতায় থাকাকালে তাজ হাট জমিদার বাড়ি রংপুর বিভাগের হাইকোর্ট হিসেবে ব্যবহৃত হতো।
রংপুর কোন খাবারের জন্য বিখ্যাত
রংপুর কিসের জন্য বিখ্যাত? আশা করি তা জেনেছেন। নিচে বিশেষ কিছু খাবার সম্পর্কে বিস্তারিত তথ্য তুলে ধরা হবে যে খাবারগুলো রংপুর অঞ্চলের ঐতিহ্যবাহী খাবার। তো চলুন দেখে নেয়া যাক , রংপুর কোন খাবারের জন্য বিখ্যাত? এ প্রশ্নের সঠিক উত্তর।
- পেলকা: রংপুরের ঐতিহ্যবাহী খাবার হলো পেলকা। বিশেষ প্রক্রিয়ায় এই খাবারটি রান্না করা হয়। পেলকা রান্না করার জন্য নাপা শাক, বতুয়া শাক এবং সজনে পাতার প্রয়োজন হয়। এর সাথে আপনি কচু শাক এবং পুইশাক যুক্ত করতে পারেন। সবগুলো শাক ভালোভাবে ধুয়ে বেকিং সোডার সাহায্যে বিশেষ প্রক্রিয়া সুস্বাদু এই খাবারটি রান্না করা হয়। উত্তরবঙ্গে এই খাবারটি খুবই জনপ্রিয় বিশেষ করে শীতকালে প্রায় সকলেই এই খাবারটি খেয়ে থাকেন।
- ডিম ভুনা: রংপুরের আরেকটি বিখ্যাত খাবার হল ডিম ভুনা। সারা বাংলাদেশে ডিম ভুনা খাওয়া হয় তবে অন্যান্য জায়গার তুলনায়, রংপুরের ডিম ভুনার স্বাদ অতুলনীয়। আপনি একবার যদি কখনো রংপুরের ডিম ভুনা খেয়ে থাকেন তাহলে এর স্বাদ কখনোই ভুলতে পারবেন না।
- চিতই পিঠা: এটি রংপুরের একটি জনপ্রিয় খাবার। চিতই পিঠা বানাতে চালের গুড়া এবং চিনির প্রয়োজন হয়। তবে অনেকেই আবার চিতই পিঠা দুধে ভিজিয়ে রেখে খেতে পছন্দ করে যাই হোক এটি সাধারণত ভেজে ভর্তা বা তরকারি দিয়ে পরিবেশন করা হয়।
- ভাপা পিঠা: এটি রংপুরের আরেকটি জনপ্রিয় পিঠা। ভাপা পিঠা তৈরি করতে শুধুমাত্র চালের গুঁড়ার প্রয়োজন হয়। তবে চাইলে আপনি চালের গুঁড়ার সাথে চিনি অথবা গুড় মিশ্রিত করতে পারেন। চাইলে এর সাথে আপনি নারকেলের কুচি কিসমিস ইত্যাদিও দিতে পারেন। এতে করে ভাপা পিঠা হবে আরো সুস্বাদু।
- রসমালাই: রসমালাই রংপুরের একটি জনপ্রিয় মিষ্টি জাতীয় খাবার। রসমালাই তৈরি করার বিশেষ প্রক্রিয়া রয়েছে। দুধের ছানা এবং চিনির সাহায্যে বিশেষ প্রক্রিয়া রসমালাই তৈরি করা হয়। রসমালাই সাধারণত ঠান্ডা করে পরিবেশন করা হয়। যদিও সারা বছর রসমালাই পাওয়া যায় তবে শীতকালে রসমালি খেতে অনেক সুস্বাদু হয়।
- পায়েস: আরেকটি জনপ্রিয় খাবার হল পায়েস। বিশেষ করে নতুন ধান, চিনি এবং দুধের সাহায্যে বিশেষ প্রক্রিয়ায় সুস্বাদু তৈরি করা হয়। নবান্ন উৎসবের সময় উত্তরাঞ্চলে সাধারণত এই ধরনের পায়েশ রান্নার প্রচলন অনেক বেশি। যদিও রংপুরের মানুষ সারা বছর পায়েস খেতে পছন্দ করে।
- কাউনের পিঠা: এটি রংপুরের একটি জনপ্রিয় পিঠা হল কাউনের পিঠা। এটি কাউনের গুঁড়া, চিনি এবং দুধ দিয়ে তৈরি করা হয়। যদিও কাউনের পিঠা এখন তেমন একটা দেখা যায় না, তবে একসময় উত্তর অঞ্চলে কাউনের পিঠা খুবই জনপ্রিয় ছিল।
- কালাই রুটি: এটি রংপুরের একটি ঐতিহ্যবাহী খাবার, যদিও কালাই রুটি রাজশাহী বিশেষ করে চাঁপাইনবাবগঞ্জ এলাকায় অনেক বেশি পাওয়া যায়। তবে দিনাজপুরেও কালাই রুটির প্রচলন রয়েছে। এবং এটি এই অঞ্চলের একটি জনপ্রিয় খাবার। কালাই ময়দা, লবণ এবং এবং মরিচের সাহায্যে সুস্বাদু এই কালায়ের রুটি তৈরি করা হয়দ। এটি সাধারণত মাংসের তরকারির সাথে পরিবেশন করা হয়।
ঢাকা থেকে রংপুর কত কিলোমিটার
রংপুর কিসের জন্য বিখ্যাত? এ বিষয় সম্পর্কে ইতোমধ্যে উপরে বিস্তারিত আলোচনা করা হয়েছে। ঢাকা থেকে রংপুর কত কিলোমিটার? তা নিচে উল্লেখ করা হবে। এর পাশাপাশি যে সকল যানবাহনে করে খুব সহজে আপনি ঢাকা থেকে রংপুর যেতে পারবেন সেগুলো সম্পর্কে বিস্তারিত তথ্য তুলে ধরা হবে। চলুন দেখে নেয়া যাক, ঢাকা থেকে রংপুর কত কিলোমিটার?
ঢাকা থেকে খুব সহজেই আপনি রংপুর ভ্রমণে আসতে পারবেন। প্রায় সকল পরিবহনের বাস সরাসরি ঢাকা থেকে রংপুরে আসে। সুতরাং আপনি যদি ঢাকা থেকে রংপুরে আসতে চান তাহলে আপনাকে যেকোনো একটি বাসের টিকিট কেটে এর পরে রংপুরে আসতে হবে।
চাইলে আপনি ট্রেনের মাধ্যমেও ঢাকা থেকে রংপুরে আসতে পারেন। যদি আপনার বাজেট ভালো থাকে তাহলে কিন্তু বিমানযোগেও ঢাকা থেকে রংপুরে যেতে পারবেন। ঢাকা থেকে রংপুর ২৯৬ কিলোমিটার।
শেষ কথা
বাংলাদেশের প্রাচীন জনপদ রংপুর সম্পর্কে এই আর্টিকেলটিতে বিস্তারিত তথ্য তুলে ধরা হয়েছে। রংপুর বিভাগ সম্পর্কে উপরে উল্লেখিত তথ্যগুলো জেনে আশা করি আপনি উপকৃত হয়েছেন। আপনি যদি উপরে উল্লেখিত তথ্য গুলো মনোযোগের সাথে পড়ে থাকেন তাহলে নিশ্চয়ই, রংপুর কিসের জন্য বিখ্যাত? তা জানতে পেরেছেন।
রংপুর বিভাগ সম্পর্কিত গুরুত্বপূর্ণ ও তথ্যবহুল এই আর্টিকেলটি চাইলে আপনি আপনার সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে শেয়ার করতে পারেন। এতে করে অন্যরাও রংপুর বিভাগ সম্পর্কে বিস্তারিত তথ্য জেনে নিতে পারবে। ১৬৪১৩