রানী প্রথম এলিজাবেথ কোন বংশদ্ভূত ছিলেন এ তথ্যটি আপনারা জানেন কি? যদি না জেনে থাকেন তবে এই পোস্টটি পুরোটা পড়ে নিন। কেননা এই আর্টিকেলে আমরা রানী প্রথম এলিজাবেথ কোন বংশদ্ভূত ছিলেন এ তথ্যটি উল্লেখ করেছি। অতএব, রানী প্রথম এলিজাবেথ কোন বংশদ্ভূত ছিলেন সেটি জানার জন্য পোস্টটি পুরোটা পড়ে ফেলুন।
পঞ্চদশ শতকে শিল্প বিপ্লবের পূর্বে ইউরোপ তথা সমগ্র ইংল্যান্ড জুড়ে উত্তরাধিকার সূত্রে ক্ষমতা হস্তান্তর করা হতো। তারই প্রেক্ষিতে প্রথম রানী এলিজাবেথ ছিলেন ইংল্যান্ডের ইতিহাসে অন্যতম আবিসংবাদিত রাষ্ট্রপ্রধান। ইংল্যান্ডকে উন্নতির উচ্চ শিখরে পৌঁছানোর ক্ষেত্রে তার অবদান ছিল অনস্বীকার্য। আজকের এই পোস্টটি থেকে আপনারা রানী প্রথম এলিজাবেথ কোন বংশদ্ভূত ছিলেন সেটি জেনে নেওয়ার পাশাপাশি রানী প্রথম এলিজাবেথের বিস্তারিত জীবন কাহিনী জানতে পারবেন।
পোস্ট সূচিপত্র – রানী প্রথম এলিজাবেথ কোন বংশদ্ভূত ছিলেন জানুন
রানী প্রথম এলিজাবেথের পরিচয়
প্রথম রানী এলিজাবেথ ১৫৩৩ সালের ৭ সেপ্টেম্বর তৎকালীন ইংল্যান্ডের গ্রিনিচ শহরের প্লাসেন্টেসিয়া প্রাসাদে জন্ম লাভ করেছিলেন। তার পিতা ছিলেন রাজা অষ্টম হেনরি। এলিজাবেথের বয়স যখন মাত্র আড়াই বছর তখন তার মাকে শিরচ্ছেদ করে হত্যা করা হয়। রানী হিসেবে প্রথম এলিজাবেথের শুরুর পদক্ষেপ ছিল প্রটেস্ট্যান্ট চার্চ প্রতিষ্ঠা করা।
সমগ্র জীবনে রানী প্রথম এলিজাবেথ অবিবাহিত ছিলেন, যে কারণে নানারকম এর বিতর্ক তার পিছু ছাড়ছিল না। ১৯৫৯ সালে মাত্র ২৬ বছর বয়সে রানী হিসেবে এলিজাবেথের অভিষেক ঘটে। সে সময় একমাত্র বিয়ের মাধ্যমেই ক্ষমতার উত্তরাধিকার হত। যেদিক থেকে রানী প্রথম এলিজাবেথ ছিলেন ব্যতিক্রম।
রানী প্রথম এলিজাবেথ কোন বংশদ্ভূত ছিলেন?
ইংল্যান্ডের বিখ্যাত টিউটর রাজ বংশের পঞ্চম এবং সর্বশেষ কুমারী রানী ছিলেন রানী প্রথম এলিজাবেথ। তিনি অসম্ভব ক্ষমতার অধিকারী ছিলেন এবং ইংল্যান্ডকে উন্নয়ন অগ্রযাত্রা ও শিল্প বিপ্লবের দিকে ধাবিত করার ক্ষেত্রে তার উল্লেখযোগ্য অবদান ছিল। তার দূরদর্শিতার কারণেই সেসময় ইংল্যান্ডের কাছে ‘দ্যা ইনভিসিবল আর্মাডা’ পরাজিত হয়েছিল। ফলে সামরিক ক্ষেত্রে সমগ্র ইউরোপে ইংল্যান্ডের শ্রেষ্ঠত্ব প্রতিষ্ঠা পেয়েছিল। তিনি ছিলেন পৃথিবীর ইতিহাসে বিয়ে না করা একমাত্র কুমারী রানী।
শাসক হিসেবে রানী প্রথম এলিজাবেথের অবদান
উত্তরাধিকার সূত্রে ক্ষমতায় আসার পর রানী প্রথম এলিজাবেথ ইংল্যান্ডকে বিশ্ব দরবারে প্রতিষ্ঠার জন্য প্রশংসনীয় বিভিন্ন উদ্যোগ গ্রহণ করেন। আপনারা তো ইতোমধ্যে রানী প্রথম এলিজাবেথ কোন বংশদ্ভূত ছিলেন সে সম্পর্কে জেনেছেন। এবার রানী প্রথম এলিজাবেথের বিভিন্ন অবদান ও কর্মকাণ্ড জেনে নিন।
- তার বাবার প্রতিষ্ঠা করা “চার্চ অব ইংল্যান্ড” কে শক্তিশালী করার জন্য ইংল্যান্ডের রাজ ধর্মকে বিশ্বব্যাপী ছড়িয়ে দেওয়ার প্রশংসনীয় উদ্যোগ গ্রহণ করেছিলেন।
- প্রটেস্ট্যান্ট এবং ক্যাথলিকদের মধ্যে তিনি সমঝোতা ঘটাতে সক্ষম হয়েছিলেন। ইংল্যান্ডকে রোম এর পর থেকে বিচ্ছিন্ন করে রাজকীয় পুনরুদ্ধার ঘটাতে সক্ষম হয়েছিলেন।
- এলিজাবেথ ছিলেন তীক্ষ্ণ বুদ্ধিসম্পন্ন ও কূটনীতিক জ্ঞানে অত্যন্ত বিচক্ষণ। সেজন্য রাষ্ট্র পরিচালনার প্রত্যেকটি পদক্ষেপ তিনি অত্যন্ত বিচক্ষণতার সহিত নিতে পেরেছিলেন।
- স্কটল্যান্ড এর রানী ম্যারি স্টুয়াটের যাবতীয় ষড়যন্ত্রের বিরুদ্ধে তিনি কৌশলী পদক্ষেপ গ্রহণ করতে সক্ষম হয়েছিলেন। এতে করে ইউরোপে ইংল্যান্ডের অবস্থান সুদৃঢ় হয়।
- আন্তর্জাতিক নীতির প্রতিটি ক্ষেত্রেই তিনি ছিলেন ইংল্যান্ডের স্বার্থে আপোহীন। যার কারণে তিনি ইংল্যান্ডের ইতিহাসের সবচেয়ে শ্রেষ্ঠ সম্রাট ছিলেন।
- প্রজাদের প্রতি তিনি ছিলেন অত্যন্ত স্নেহপরায়ণ তবে তার ভেতরে ছিল বাবার মতই কিছুটা অহংকার ছিল।
- রনি এলিজাবেথের এতই ক্ষমতা ছিল যে তিনি ইংল্যান্ডের ভেতর তার ইচ্ছা অনুযায়ী যে কোন কর্মকাণ্ড পরিচালনা করতে পারতেন।
রাণী প্রথম এলিজাবেথের মৃত্যু
রানী প্রথম এলিজাবেথ ২৪ শে মার্চ ১৬০৩ সালে ইংল্যান্ডের রিচমন্ড প্রাসাদে মৃত্যুবরণ করেন। তার মৃত্যু নিয়ে পরবর্তীতে নানা বিতর্কের জন্ম হয়। রানী প্রথম এলিজাবেথ তার শাসনকালে ইংল্যান্ড কে সমগ্র বিশ্বের দরবারে যথাযথভাবে প্রতিষ্ঠিত করতে সক্ষম হন। তার নেওয়ার সাহসী ও যুগান্তকারী পদক্ষেপগুলো সে সময় ছিল অতুলনীয়। এজন্য তিনি বিশ্বের অন্যতম সেরা শাসকগুলোর মধ্যে জায়গা করে নিয়েছেন।
উপসংহার
প্রিয় পাঠক আজকের এই পোস্টে আমরা রানী প্রথম এলিজাবেথ কোন বংশদ্ভূত ছিলেন সে বিষয়টি যথাযথভাবে উল্লেখ করার চেষ্টা করেছি। এছাড়াও এলিজাবেথের তার শাসনকালে কি কি অবদান তিনি রেখেছিলেন সে বিষয়টি আপনাদের সামনে তুলে ধরার চেষ্টা করেছি। তিনি জীবনে বিয়ে না করার কারণে তার পরবর্তী উত্তরসূরী ঠিক করা বেশ কষ্টসাধ্য হয়ে পড়ে। সেজন্য রানী এলিজাবেথকে নানা বিতর্ক ও ষড়যন্ত্রের মধ্য দিয়ে তার শাসন কার্য পরিচালনা করতে হয়।
পরবর্তীতে রানী প্রথম এলিজাবেথ মারা যাওয়ার পর দ্বিতীয় এলিজাবেথ ক্ষমতায় আসে। তিনিও ইংল্যান্ডকে বিশ্ব দরবারে সুপ্রতিষ্ঠিত করার জন্য অসামান্য অবদান রাখেন। তবে রানী প্রথম এলিজাবেথের জীবন কর্ম ও বিচক্ষণ দিকগুলো একজন শাসকের জন্য সত্যিই অনুকরণীয়। রানী প্রথম এলিজাবেথ কোন বংশদ্ভূত ছিলেন তা অন্যদের জানাতে এই পোস্টটি এখনই শেয়ার করুন। রানী এলিজাবেথের ইতিহাস ও জীবনী সংক্রান্ত আরো পোস্ট পেতে নিয়মিত আমাদের ওয়েবসাইটে নজর রাখুন। @23891