বিকাশ এজেন্ট নিয়ে ব্যবসা করার নিয়ম
যদি আপনি সকল শর্তাবলী পূরণ করে আবেদনের মাধ্যমে একজন বিকাশ এজেন্ট হয়ে থাকেন, তবে অবশ্যই আপনাকে বিকাশ এজেন্ট ব্যবসা করার নিয়ম সম্পর্কে পরিপূর্ণ ধারণা রাখতে হবে। এবার আপনাদের জন্য বিকাশ এজেন্ট ব্যবসা করার কিছু নিয়ম উল্লেখ করা হলো।
বিকাশ এজেন্ট হিসেবে আপনাকে আপনার এজেন্ট একাউন্ট থেকে প্রতিদিন কমপক্ষে দুই হাজার টাকা লেনদেন করতে হবে।
এজেন্ট একাউন্টে ব্যালেন্স হিসেবে সর্বনিম্ন ৭ হাজার টাকা আপনাকে রাখতেই হবে। আর বিকাশ এজেন্ট হয়ে গেলে প্রথমবার সর্বনিম্ন ১ লক্ষ টাকা আপনাকে লোড করতে হবে।
আপনার এজেন্ট ব্যবসা টিকিয়ে রাখতে হলে প্রতি মাসে কমপক্ষে পাঁচটি পার্সোনাল বিকাশ একাউন্ট খুলে দিতে হবে। এই সকল শর্তাবলী বিকাশ এজেন্ট ব্যবসা করার নিয়ম হিসাবে আপনাকে অবশ্যই মেনে চলতে হবে।
বিকাশ এজেন্ট হতে কি কি প্রয়োজন হয়
বিকাশ এজেন্ট ব্যবসা করার নিয়ম জেনে নেওয়ার পূর্বে অবশ্যই আপনাকে বিকাশ এজেন্ট হওয়ার শর্তগুলো সম্পর্কে জান অর্জন করতে হবে। চলুন বিকাশ এজেন্ট হতে কি কি প্রয়োজন হয় জেনে নেওয়া যাক।
অনেকেই প্রথমে জিজ্ঞাসা করেন বিকাশ এজেন্ট হতে কত টাকা লাগে? আসলে বিকাশ এজেন্ট হতে এক্সট্রা কোন টাকা লাগে না। আপনি কিছু শর্ত পূরণ করলে ফ্রিতে বিকাশ এজেন্ট হতে পারবেন। সর্বোচ্চ আপনাকে ৫০০ টাকা দিয়ে একটি এজেন্ট সিম ক্রয় করতে হতে পারে।
এজেন্ট হওয়ার জন্য অবশ্যই আপনি একটি নিজস্ব দোকান থাকতে হবে এবং দোকানে যে প্রচুর লোক সমাগম হয় এবং আপনার ব্যবসা ভালো চলবে সেটির নিশ্চয়তা থাকতে দেব।
আপনার ব্যবসা প্রতিষ্ঠানের জন্য একটি ট্রেড লাইসেন্স এবং আপনার টিন সার্টিফিকেট থাকতে হবে।
এছাড়াও বিকাশ এজেন্ট হতে হলে আপনার জাতীয় পরিচয় পত্র, সত্যায়িত ছবি এবং সিম কার্ড প্রয়োজন হবে। পোষ্টের পরবর্তী অংশ থেকে আপনার। বিকাশ এজেন্ট ব্যবসা করার নিয়ম জানতে পারবেন।
বিকাশ এজেন্ট কমিশন কত টাকা
বিকাশের ব্যবসা শুরু করার পূর্বে আপনার মনে অবশ্যই এই ধরনের প্রশ্ন আসবে যে বিকাশের ব্যবসায় লাভ কেমন অথবা বিকাশ কর্তৃপক্ষ একজন এজেন্টকে কত টাকা কমিশন দিয়ে থাকে। চলুন জেনে নেওয়া যাক বিকাশ এজেন্ট কমিশন কত টাকা প্রদান করে থাকে
আপনি যদি এজেন্ট হিসেবে *২৪৭# ডায়াল করে লেনদেন করে থাকেন, তবে প্রতি হাজারে ৪.১০ টাকা করে কমিশন পাবেন। সেই হিসেবে ১০ হাজার টাকা লেনদেন করলে ৪১ টাকা এবং ১ লক্ষ টাকা লেনদেন করলে ৪১০ টাকা কমিশন বোনাস পাবেন।
আবার আপনার এজেন্ট ব্যবসা যদি আপনি অ্যাপের মাধ্যমে সম্পাদন করেন সেক্ষেত্রে অ্যাপস ব্যবহার করার কারণে প্রতি হাজার ৪.৫০ টাকা কমিশন পাবেন। সে হিসাবে ১০ হাজারে ৪৫ টাকা এবং ১ লক্ষ টাকা লেনদেন সম্পন্ন করলে ৪৫০ টাকা কমিশন বোনাস পাবেন।
বিকাশের লেনদেন করার জন্য একটি এজেন্ট আপ রয়েছে যার মাধ্যমে আপনি খুব সহজেই নিরাপদ ভাবে লেনদেন সম্পন্ন করতে পারবেন। এখানে খুব সহজে বিল পরিশোধের সুবিধা রয়েছে। তাছাড়াও প্রতিদিনের লেনদেনের সুন্দর তালিকাও দেখতে পাবেন। সুতরাং, বিকাশ এজেন্ট ব্যবসা করার নিয়ম এখন আপনাদের সামনে অনেকটাই পরিষ্কার হয়ে গেছে।
বিকাশের ব্যবসা করার ১০টি উপায়
বিকাশ এজেন্ট ব্যবসা করার নিয়ম অলরেডি আপনারা জেনে ফেলেছেন। আপনার যদি ব্যবসার মন মানসিকতা থেকে থাকে তবে বিকাশের ব্যবসা করে ভালো পরিমাণ মুনাফা অর্জন করতে পারবেন। এবার আমি আপনাদের সামনে কার্যকর ভাবে বিকাশের ব্যবসা করা ১০টি উপায় তুলে ধরব।
আরো পড়ুনঃ সিটি ব্যাংক চেক করার নিয়ম
1. বিকাশের ব্যবসা করার জন্য সুন্দরভাবে একটি ব্যবসা প্রতিষ্ঠান দাড় করান।
2. হাতে পর্যাপ্ত মূলধন রাখুন যেন বিকাশের ব্যবসা একবার শুরু হলে তা বজায় রাখতে পারেন।
3. যেহেতু বিকাশে ব্যবসা বজায় রাখার জন্য আপনাকে পার্সোনাল অ্যাকাউন্ট খুলে দিতে হবে, সেহেতু মানুষকে পার্সোনাল অ্যাকাউন্ট খোলার প্রতি উদ্বুদ্ধ করুন।
4. প্রতিদিন যে কোন কৌশল খাটিয়ে হোক বেশি লেনদেন করার চেষ্টা করুন।
5. ব্যবসায়িক এরিয়াতে বিকাশের ব্যবসা চালু করুন। কারণ এসব এলাকায় মোবাইল ব্যাংকিং এর মাধ্যমে প্রচুর লেনদেন হয়।
6. বিকাশের ব্যবসায় সফল হওয়ার অন্যতম হাতিয়ার হলো আপনার মনোবল শক্ত রাখা।
7. আপনি আপনার ব্যক্তিগত লেনদেনও আপনার এজেন্ট একাউন্ট এর মাধ্যমে করুন।
৪. বিকাশ ব্যবসায় অতিরিক্ত লাভ করার জন্য অবশ্যই বিকাশের অ্যাপস ব্যবহার করুন।
9. বিকাশের প্রতিটি লেনদেনের পরে সতর্কতা হিসেবে ব্যালেন্স চেক করুন।
10. বিকাশের কমিশনের টাকা থেকে আপনার ব্যবসা আরো বড় করার চেষ্টা করুন। সর্বশেষে, বিকাশ এজেন্ট ব্যবসা করার নিয়ম পোস্টের উপরের অংশ থেকে আবারও পড়ে নিতে পারেন।
নতুনদের জন্য সতর্কতা
সব সময় আমাদের একটা বিষয় মাথায় রাখতে হবে সেটা হলো বিকাশ একটি গুরুত্বপূর্ণ এবং গোপনীয় ব্যবসা যেটি অন্য কারো সাথে এর সিক্রেট শেয়ার করা যায় না। যেমন বিকাশের পাসওয়ার্ড, বিকাশের পিন নাম্বার অর্থাৎ কোড নাম্বার এগুলো কখনোই কারো সাথে শেয়ার করা যাবে না। বেশিরভাগ ক্ষেত্রে নতুনদের বিভিন্ন ধরনের সমস্যায় পড়তে হয় না জানার কারণে। যেমন বাংলাদেশের বিভিন্ন ধরনের স্ক্যামার (scamer) রয়েছে অর্থাৎ হ্যাকার তারা আপনাকে কল দিয়ে বিকাশ অফিসের কর্মচারী দাবি করবে, এবং আপনাকে বিভিন্ন তথ্য দিবে যেন আপনি সহজেই তাদেরকে বিশ্বাস করতে পারেন।
এবং বলে আপনার একাউন্টের একটি সমস্যা হয়েছে আপনি যদি সাময়িক সময়ের জন্য এই সমস্যাটা সমাধান না করেন তবে আপনার অ্যাকাউন্টটি বন্ধ করে দেওয়া হবে। এই বলে তাদের মনের মধ্যে ভয় ঢুকিয়ে দেয় এবং তাদের দেওয়া নাম্বারে একটা কোড পাঠায় এবং সেই কোড তাদেরকে দিতে বলে একাউন্ট বাচানোর কথা চিন্তা করে ভিক্টিম সেই ফাদে পা দেয় শুধু মাত্র জানা না থাকার কারণে।
মনে রাখবেন বিকাশ কখনোই আপনার থেকে পিন কোড চাইবে না। যখনই কোন হ্যাকার আপনাকে ফোন দিয়ে পিন কোড চাইবে সঙ্গে সঙ্গে আপনি বুঝে যাবেন এটা একটা হ্যাকার। তাৎক্ষণাৎ তার সাথে যেমন আচরণ করা প্রয়োজন আপনি তেমন আচরণ করবেন। যেন সে বুঝতে পারে আপনি এতটাও বোকা না। সুতরাং সাবধান থাকুন সকল ধরনের প্রতারণা থেকে নিজেকে বাঁচিয়ে রাখুন, নিজের ব্যবসাকে এগিয়ে নিয়ে যান।
আমাদের শেষ কথা
প্রিয় বন্ধুগন, আপনি যদি একজন সফল বিকাশ এজেন্ট হতে চান তবে এই পোস্টটি আপনার জন্য বেশ উপকারী হবে। কেননা এই পোস্টটি পুরোটা পড়ে আপনারা বিকাশ এজেন্ট ব্যবসা করার নিয়ম জানার পাশাপাশি বিকাশের ব্যবসায় লাভবান হওয়ার কিছু কৌশলও জানতে পেরছেন। তাই দেরি না করে বিকাশ এজেন্ট ব্যবসা করার নিয়ম আপনার অন্য বন্ধুদের জানাতে এখন পোস্টটি শেয়ার করুন এবং সব সময় আমাদের ওয়েবসাইটের সঙ্গেই থাকুন। এতক্ষণ আমাদের সাথে থাকার জন্য অসংখ্য ধন্যবাদ।